ধৃত যশোবন্ত চৌহান। ছবি: তাপস ঘোষ।
টিভিতে নাচার সুযোগ করে দেওয়ার নাম করে ভিন রাজ্যে পাচার হয়ে যাওয়া এক কিশোরীকে উত্তরপ্রদেশ থেকে উদ্ধার করে আনল হুগলির ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ। পাচার এবং মেয়েটিকে জোর করে আটকে রাখার অভিযোগে ওই রাজ্যের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম যশোবন্ত চৌহান। হুগলির এসপি সুনীল চৌধুরী বলেন, “এই সব ঘটনায় মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। ভাল করে খোঁজখবর না করে মেয়েকে বাইরে পাঠানো উচিত নয়।” এসপি বলেন, “ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস এলাকার ১৬ বছরের ওই কিশোরী চাঁপদানীতে এক জনের কাছে নাচ শিখত। তার নাচ দেখে নৃত্যশিক্ষকের মাসতুতো ভাই ভিকি এবং তার স্ত্রী প্রিয়া দাস টিভিতে নাচার প্রস্তাব দেয়। তিনি রাজি না হওয়ায় কাঁকিনাড়ার বাসিন্দা ওই দম্পতি সরাসরি কিশোরীকেই ওই প্রস্তাব দেয়। মেয়েটি রাজি হয়ে যায়। গত জানুয়ারি মাসের গোড়ায় ওই দম্পতির হাত ধরেই সে উত্তরপ্রদেশে পৌছয়। অভিযোগ, দাস দম্পতি মেয়েটিকে উত্তরপ্রদেশের খুশিনগর জেলার খাসিয়া মঞ্চচপর এলাকার বাসিন্দা উপেন্দ্র চৌহান এবং যশোবন্ত চৌহানের কাছে বিক্রি করে দেয়। মেয়েটির বাড়ির লোকজন জানান, তাঁরা মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তাঁরা বিষয়টি মেয়ের নৃত্যশিক্ষককে জানান। এর পরেই মেয়েটির বাড়ির লোক কাঁকিনাড়ায় ভিকির বাড়িতে যান। সেখানে অবশ্য তাদের দেখা মেলেনি। ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ দিকে উত্তরপ্রদেশ থেকে মেয়েটির বাড়িতে একটি ফোন আসে। একটি পুরুষকণ্ঠ ফোনে জানায়, মেয়ে তাদের কাছে আছে। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন চাওয়া হয়। এরপরে অবশ্য ওই ফোন নম্বরে কোনও সাড়া মেলেনি। এর পরেই কিশোরীর মা ভদ্রেশ্বর থানায় অপহরণের লিখিত অভিযোগ অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। ফোনের সূত্র ধরে ভদ্রেশ্বর থানার ওসি অনুদ্যুতি মজুমদার জানতে পারেন, কিশোরী উত্তরপ্রদেশের কোনও একটি জায়গায় রয়েছে। এর পরেই পুলিশের একটি দল গত ৭ই মার্চ ওই রাজ্যে যায়। স্থানীয় থানার সহযোগিতায় খুশিনগরে যশোবন্তের বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে তারা। গ্রেফতার করা হয় যশোবন্তকে। বুধবার সন্ধ্যায় কিশোরীকে ভদ্রেশ্বরে নিয়ে আসে পুলিশ। কিশোরীর মা বলেন, ‘‘টিভিতে নাচার ব্যবস্থা করে দেবে বলে মেয়েকে যে ওরা বিক্রি করে দেবে, ভাবতেও পারিনি। শেষ পর্যন্ত যে মেয়েকে ফিরে পেয়েছি, এটাই অনেক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy