Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
ফের অশান্ত হরিণখোলা

বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর, অভিযুক্ত তৃণমূল

রাজনৈতিক সন্ত্রাস অব্যাহত আরামবাগের হরিণখোলায়। গত দু’সপ্তাহ ধরে তৃণমূল-বিজেপি-র হামলা পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত ওই এলাকায় পুলিশ ক্যাম্পও বসানো হয়েছে। তারপরেও রবিবার ফের তিন বিজেপি-কর্মীর ঘরদোর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের তরফে যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত বিজেপি-র তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫২
Share: Save:

রাজনৈতিক সন্ত্রাস অব্যাহত আরামবাগের হরিণখোলায়। গত দু’সপ্তাহ ধরে তৃণমূল-বিজেপি-র হামলা পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত ওই এলাকায় পুলিশ ক্যাম্পও বসানো হয়েছে। তারপরেও রবিবার ফের তিন বিজেপি-কর্মীর ঘরদোর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের তরফে যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত বিজেপি-র তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

আরামবাগে সংখ্যালঘু সেলের বিজেপি ব্লক সভাপতি নাসিরুদ্দিন মোল্লার অভিযোগ, এ দিন সকালে তৃণমূলের লোকেরা দোরজিপোতা গ্রামে আমাদের কর্মী শেখ গোলাম রসুল, শেখ কাল্টু এবং শেখ বাবলুর ঘর ভাঙচুর করে। এলাকায় শান্তি রক্ষার নামে পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও তৃণমূল যাতে অবাধে হামলা করতে পারে সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছে তারা।” খানাকুলের তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমান অবশ্য বিজেপি-র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। কোথাও কোনও অশান্তি নেই। ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা অটুট রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।”

বিজেপি-র পাল্টা অভিযোগ, শান্তি মিছিল করে শান্তি ফেরানোর নামে তৃণমূল পুলিশের সাহায্য নিয়ে হামলা চালাচ্ছে তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে দোরজিপোতা গ্রামে কয়েকজন বিজেপি কর্মীর বাড়িতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়, ভাঙচুর করে। কিন্তু খবর পেয়ে তারা যাওয়ার আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, হামলার পর ওই এলাকায় পুলিশ রয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বকে ওই ঘটনায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দখল এবং পুনর্দখলের জেরে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই সন্ত্রস্ত্র আরামবাগের হরিণখোলা সংলগ্ন পূর্ব কৃষ্ণপুর, অরুণবেড়া, গোলামিচক, দোরজিপোতা এবং আমগ্রাম। এই পাঁচটি গ্রাম যার দখলে সেই জয়নাল খাঁর অনুগামীরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই অশান্তি লেগে ছিল গ্রামগুলিতে।

গত ৮ ফেব্রয়ারি তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির পতাকা পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ৯ জানুয়ারি রাত থেকে ১০ তারিখ সকাল পর্যন্ত তৃণমূল ও বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের হামলা এবং পাল্টা হামলায় পূর্ব কৃষ্ণপুর-সহ লাগোয়া বাকি গ্রামগুলি থেকেও মোট ৫৭ জন তৃনমূল নেতা-কর্মী ঘরছাড়া হন। এর পর ১২ ফেব্রয়ারি ওই ঘরছাড়াদের ফেরানো হয় তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত এবং পুড়শুড়া বিধায়ক পারভেজ রহমানের নেতৃত্বে। ওই দিনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিজেপির কিছু নেতা-কর্মী ঘরছাড়া হন।

১৩ ফেব্রয়ারি সকালে হরিণখোলা বাজারে পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রামের বিজেপি কর্মী তথা জয়নাল খাঁর দাদা সাদে মনিক খাঁ’র মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের ঘরছাড়া হতে হয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। গত ১৮ ফেব্রয়ারি রাজ্যে বনগাঁ (লোকসভা) ও কৃষ্ণগঞ্জ (বিধানসভা), দু’টি উপনির্বাচনে জেতার পর বিজেপির দখলে চলে যাওয়া হরিণখোলা সংলগ্ন পূর্ব কৃষ্ণপুর-সহ ৫টি গ্রাম ফের পুনরুদ্ধার করে তৃণমূল। ওই দিনই দুপুরে পুড়শুড়ার তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমানের নেতৃত্বে হাজার পাঁচেক কর্মী-সমর্থক নিয়ে বিজয় মিছিলের পাশাপাশি ৭৫ জন ঘরছাড়াকেও ফেরানো হয়।

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, অশান্তির জেরে তাঁদেরও ৬৫ জন কর্মী-সমর্থক ঘড়ছাড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE