চন্দননগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রবীর।—নিজস্ব চিত্র।
দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে হুগলি জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদককে লাঠি-রড-চেন দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে চন্দননগরের মধ্যাঞ্চল এলাকায়। প্রবীর পাখিরা নামে প্রহৃত ওই বিজেপি নেতাকে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর বাঁ চোখে আঘাত লেগেছে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। সোমবার রাত পর্যন্ত হামলাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ জানিয়েছেন, পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরে দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে যান প্রবীরবাবু। বৈঠক শেষে ট্রেনে চেপে রাত ১০টা নাগাদ চন্দননগর স্টেশনে নামেন। এর পরে পঞ্চানন পাণ্ডে নামে এক দলীয় কর্মীর সঙ্গে সাইকেলে বাগবাজারে দলীয় কার্যালয়ের দিকে রওনা হন। মধ্যাঞ্চল এলাকায় একটি দোকানে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়ান। অভিযোগ, সেই সময় কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক যুবক প্রবীরবাবুর উপর চড়াও হয়। তাঁকে মাটিতে ফেলে যথেচ্ছ চড়, কিল, ঘুষি মারতে থাকে। পঞ্চাননবাবু বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যে ওই জায়গায় রড, সাইকেলের চেন, লাঠি নিয়ে আরও এক দল যুবক চলে এসে তাঁদের মারধর করে। মারের চোটে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন ওই বিজেপি নেতা। হামলাকারীরা গা-ঢাকা দেয়।
পঞ্চাননবাবুর কাছ থেকে খবর পেয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে আসেন। প্রবীরবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের নামে চন্দননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় বিজেপির তরফে। প্রবীরবাবু বলেন, “দিন কয়েক আগে চন্দননগরের কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিজেপিতে যোগ দেন। সেই আক্রোশেই আমাকে মারধর করা হল।” সোমবার সকালে আহত নেতাকে দেখতে চন্দননগর হাসপাতালে যান রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শমীক ভট্টাচার্য। তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের সাম্প্রতিক মন্তব্য টেনে শমীকবাবুর কটাক্ষ, “প্রবীরকে যারা মারধর করেছে তারা চন্দননগরের মাল। এক জন সাংসদ চন্দননগরের লোক হয়ে যদি বলতে পারেন, আমি চন্দননগরের মাল, তা হলে সেই মালেরা আর কত ভাল হতে পারে! তৃণমূল সন্ত্রাসবাদী মালেদের দল হয়ে গিয়েছে। পুলিশ পারলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দেখাক।”
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে চন্দননগরের মেয়র তৃণমূলের রাম চক্রবর্তীর দাবি, “মিথ্যা অভিযোগ। ওই বিজেপি নেতা চাকরি দেওয়ার নাম করে এক জনের থেকে টাকা নিয়েও চাকরি দিতে পারেননি। টাকাও ফেরত দেননি। সেই কারণে প্রহৃত হয়েছেন। ঘটনার কথা ধামাচাপা দিতে আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে।” প্রবীরবাবু টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মানেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy