Advertisement
E-Paper

বোনাস নিয়ে উত্তাল ফোর্ট গ্লস্টার, ভাঙচুর-মারধর

বোনাস সংক্রান্ত জটিলতাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষে বৃহস্পতিবার সকালে উত্তাল হল বাউড়িয়ার ফোর্ট গ্লস্টার জুটমিল। শ্রমিকদের একাংশ মিলের অফিস-ঘরে ভাঙচুর চালায় এবং আইএনটিটিইউসি-র কয়েক জন নেতাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। আইএনটিটিইউসি নেতাদের মদতেই কর্তৃপক্ষ এ বার বোনাস কমিয়েছেন বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। গোলমালের জেরে উত্‌পাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৬
জুটমিল চত্বরে ভাঙচুর শ্রমিকদের।

জুটমিল চত্বরে ভাঙচুর শ্রমিকদের।

বোনাস সংক্রান্ত জটিলতাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষে বৃহস্পতিবার সকালে উত্তাল হল বাউড়িয়ার ফোর্ট গ্লস্টার জুটমিল। শ্রমিকদের একাংশ মিলের অফিস-ঘরে ভাঙচুর চালায় এবং আইএনটিটিইউসি-র কয়েক জন নেতাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। আইএনটিটিইউসি নেতাদের মদতেই কর্তৃপক্ষ এ বার বোনাস কমিয়েছেন বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। গোলমালের জেরে উত্‌পাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

চেষ্টা করেও মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আইএনটিটিইউসি-র পক্ষ থেকে ভাঙচুর এবং মারধরের ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে বিজেপি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘকে (বিএমএস)। আইএনটিটিইউসি নেতা দিবাকর জানা বলেন, “বোনাস কমানো নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় আপত্তির কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। পরে আলোচনায় সমস্যা মেটানো যেত। কিন্তু বিএমএস ভাঙচুর ও মারধর করে মিল বন্ধ করতে চাইছে। এটা একটা বড় চক্রান্ত।”

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মিলের বিএমএস নেতা রুদ্রপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “আমাদের সংগঠনের কেউ ভাঙচুর করেনি। দলমত নির্বিশেষে সব শ্রমিক বোনাস কমিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করেন।”

পুলিশ পৌঁছলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার সুব্রত জানার তোলা ছবি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিলের হাজার তিনেক শ্রমিককে এ দিন থেকে পুজোর বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিতর্ক বাধে বুধবার সন্ধ্যায় বোনাসের স্লিপ বিলির পর থেকেই। স্লিপে বোনাস কম দেখে সন্তুষ্ট হতে পারেননি অনেক শ্রমিকই। কথা বলার জন্য লেবার অফিসারের কাছে গেলে তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ। রাতে আর কিছু না হলেও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ দলে দলে হাজির হয়ে যান বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। অফিস-ঘরের চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানলার কাচ, এমনকী সিসিটিভির যন্ত্রপাতিতে ভাঙচুর চালানো হয়। এই সময়ে ওই অফিস-ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েক জন আইএনটিটিইউসি নেতা। তাঁরাও প্রহৃত হন। দু’জনকে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

শ্রমিকেরা জানান, তাঁদের মধ্যে যাঁদের বেতন ১০ হাজার টাকার বেশি, তাঁদের বোনাস দেওয়া হয় না। যাঁরা ১০ হাজার টাকার কম বেতন পান, তাঁদের গড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে বোনাস দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা ১০ হাজার টাকা বেতন পেলেও তা কার্যকর হয় ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে। সেই সব শ্রমিককে এ বার যে বোনাসের স্লিপ দেওয়া হয় তাতে দেখা যায়, ২০১৩-র এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত হিসাব করে সাত মাসের বোনাস দেওয়া হয়েছে। বাকি পাঁচ মাসের টাকা বোনাসের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে অগ্রিম হিসাবে, যা পরিশোধযোগ্য।

শুধু তাই নয়, যাঁরা ১০ হাজার টাকার কম বেতন পান তাঁদেরও আর্থিক বছরে ১৮০টি কাজের দিন ধরে দিনপ্রতি ১০ টাকা হিসাবে বোনাস দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে বাড়তি সাতশো টাকা করে দেওয়া হয়েছে অগ্রিম হিসাবে। যা এ ক্ষেত্রেও পরিশোধযোগ্য।

বোনাসের স্লিপে এই সব দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকদের একাংশ। ১০ হাজার টাকা বেতনের শ্রমিকেরা দাবি করেন, অগ্রিম বাবদ যে টাকা দেওয়ার কথা স্লিপে লেখা রয়েছে, তা রদ করে বোনাস হিসাবেই গণ্য করতে হবে। বাকিদের প্রতি বছরের মতো সাড়ে তিন হাজার টাকা করেই বোনাস দিতে হবে।

bauria fort gloster jutemill ex gratia bonus agitation southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy