Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখার ভিড় সামলাতে থাকছে ১০০ পুরকর্মী

মহা নবমীর সন্ধ্যাতেই বেজে উঠল বিসর্জনের সুর। যদিও শেষ পাতে একেবারে চেটেপুটে খাওয়ার মতো এ দিনও চন্দননগরের মণ্ডপে মণ্ডপে উপচে পড়েন দর্শনার্থীরা। মনে হচ্ছিল পুজো শেষের ঘণ্টা বাজলেও যেন শেষ নেই এই উন্মাদনার। তবে শেষ বেলায় দর্শকের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেও বিভিন্ন পুজো কমিটি তাঁদের বিসর্জন নিয়ে একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে লড়াইতে নেমে পড়েছেন। শোভাযাত্রায় গেটের আলোকসজ্জায় একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার লড়াই এ বারও বজায় রয়েছে।

চন্দননগরের মারান রোডের মণ্ডপে নবমীতে মানুষের ঢল।--নিজস্ব চিত্র।

চন্দননগরের মারান রোডের মণ্ডপে নবমীতে মানুষের ঢল।--নিজস্ব চিত্র।

তাপস ঘোষ
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৪ ০০:২২
Share: Save:

মহা নবমীর সন্ধ্যাতেই বেজে উঠল বিসর্জনের সুর। যদিও শেষ পাতে একেবারে চেটেপুটে খাওয়ার মতো এ দিনও চন্দননগরের মণ্ডপে মণ্ডপে উপচে পড়েন দর্শনার্থীরা। মনে হচ্ছিল পুজো শেষের ঘণ্টা বাজলেও যেন শেষ নেই এই উন্মাদনার।

তবে শেষ বেলায় দর্শকের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেও বিভিন্ন পুজো কমিটি তাঁদের বিসর্জন নিয়ে একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে লড়াইতে নেমে পড়েছেন। শোভাযাত্রায় গেটের আলোকসজ্জায় একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার লড়াই এ বারও বজায় রয়েছে।

রবিবার, দশমীর সকাল থেকেই গঙ্গার পথে যাত্রা শুরু হবে বাড়ির প্রতিমাগুলির। যে সব বারোয়ারি রাতে শোভাযাত্রায় যোগ দেবে না সেগুলিও এই সময় বিজর্সন দেওয়া হয়। তবে সন্ধের পর বিসর্জনের শোভাযাত্রা এক অন্য মাত্রা পায়। চন্দননগরের রাজপথে সেই শোভাযাত্রার আলোর খেলায় মেতে ওঠে সারা শহর। যা গড়ায় পরদিন সকাল পর্যন্ত।

চন্দননগরের রানিঘাটেই চলে মূল ভাসানপর্ব। তা ছাড়া শিবপাঠি ঘাট এবং গোন্দলপাড়া ঘাটেও বিসর্জন হয়। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় যত না দর্শনার্থী আসেন তার চেয়ে অনেক বেশি দর্শনার্থী ভিড় করেন বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখতে। শুধু হুগলি নয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এ দিন পায়ে পা মেলান চন্দননগরের অলিতে গলিতে। একএকটা লরিতে আলোর ডালি সাজিয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করবে প্রতিমা-সহ শোভাযাত্রা। চন্দননগরের স্ট্র্যান্ড ঘাট, উর্দিবাজার, গঞ্জেরবাজার, জিটি রোডে ধরে এগিয়ে তালডাঙা, পালপাড়া রোড, স্টেশন রোড হয়ে বাগবাজার দিয়ে ফের জিটি রোড ধরে জ্যোতির মোড় হয়ে আবার স্ট্র্যান্ড ঘাটের রানিঘাটে এসে শেষ হয় শোভাযাত্রা।

বিসর্জনের শোভাযাত্রাকে ঘিরে এ বারও কোমর বাঁধছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, বিসর্জনের সময় যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য পুরসভার ১০০ জন কর্মী সদা সতর্ক থাকবেন গঙ্গার ঘাটে। সব সময় ৩০ জন পুরকর্মী নজর রাখবেন গঙ্গা যাতে দূষণের হাত থেকে রক্ষা পায় সে দিকে। প্রতিমা বিসর্জনের পর কাঠামো-সহ অন্যান্য জিনিস সঙ্গে সঙ্গে তুলে এনে গঙ্গার পাড়ে জড়ো করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে পুরসভার তরফে।

পুরসভার পক্ষ থেকে গঙ্গার ঘাটে প্রাথমিক চিকিত্‌সা কেন্দ্র রাখা হচ্ছে যাতে বিসর্জন দিতে আসা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চিকিত্‌সার ব্যবস্থা করা যায়। কলকাতা ও অন্যান্য জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীদের যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য সারারাত পানীয় জলের ব্যবস্থার পাশাপাশি মূল রাস্তা ছাড়াও অলি গলিতে বিশেষ আলোর ব্যবস্থা করেছে পুরসভা। এ ব্যাপারে নজরদারি চালাবেন পুরসভার পূর্তবিভাগের আধিকারিকরা।

পুরসভা সূত্রে খবর, এ বছর শোভাযাত্রায় যোগ দিচ্ছে ৫৭টি বারোয়ারি। প্রতি বারোয়ারির ভাসানে তিনটি করে আলোকসজ্জার লরি থাকছে। বিসর্জন নিয়ে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহিলাদের যাতে কেউ উত্যক্ত না করে সে জন্য মহিলা পুলিশের একটি বিশেষ দল শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নজরদারি চালাবে। গঙ্গার উল্টোদিকে জগদ্দল, নৈহাটি, কাঁকিনাড়া প্রভৃতি জায়গা থেকে প্রচুর মানুষ চন্দননগরে আসেন বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখতে। তাঁদের সুবিধার্থে গঙ্গা পারাপারের জন্য সারারাত ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে জগদ্ধাত্রীর বিসর্জন নিয়ে তৈরি প্রশাসন। উন্মুখ দর্শনার্থীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE