Advertisement
E-Paper

বাড়িতে ঢুকে দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে

পুলিশের কাছে করা অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য এ বার বাড়িতে ঢুকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। ওই বিধায়কের নাম জটু লাহিড়ী। তিনি হাওড়ার শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৭
প্রহৃত দম্পতি। —নিজস্ব চিত্র।

প্রহৃত দম্পতি। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশের কাছে করা অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য এ বার বাড়িতে ঢুকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। ওই বিধায়কের নাম জটু লাহিড়ী। তিনি হাওড়ার শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত রামরাজাতলা এলাকার সাঁতরাগাছি সমবায় ব্যাঙ্কে নকল সোনা দিয়ে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, গত অগস্ট মাসে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের ১৬ জন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যা, ওই ব্যাঙ্কের কয়েক জন পদস্থ কর্তা ও কর্মী তাঁদের টাকার লোভ দেখিয়ে স্বর্ণ ঋণের আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে তাঁদের নামে নকল সোনা রেখে গত চার-পাঁচ বছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করছে।

এই অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই গত ২৩ অগস্ট পুলিশ প্রথমে কিশোর পাঠক নামে ব্যাঙ্কের এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করে। এর পর নকল সোনাকে আসল সোনা বলে শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগে ব্যাঙ্কের নিযুক্ত স্বর্ণকার অরুণ আশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ব্যাঙ্কের এক জন পদস্থ কর্মী পালিয়ে যান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। টাকা ও বন্ধক রাখা গয়না ছাড়াতে ব্যাঙ্কের সামনে হাজার হাজার গ্রাহকের লাইন পড়ে যায়। ব্যাঙ্ক অবশ্য কিছু টাকা মিটিয়ে দিলে কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়।

ওই সমবায় ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ বছর ধরেই ব্যাঙ্কের সঙ্গে নানা ভাবে যুক্ত রয়েছেন শিবপুরের ওই বিধায়ক। বিভিন্ন সময়ে তিনি ব্যাঙ্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন। এলাকার লোকজনও ব্যাঙ্কটি পরিচালনার ক্ষেত্রে জটুবাবুই শেষ কথা বলে জানেন। বর্তমানে তিনি ব্যাঙ্কের মুখ্য উপদেষ্টা।

কিন্তু কী এমন ঘটল ব্যাঙ্কের মুখ্য উপদেষ্টা তাঁরই পাড়ার এক ব্যক্তির বাড়িতে চড়াও হলেন?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের নকল সোনা জালিয়াতি নিয়ে যে ১৬ জন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি জটুবাবুর অফিস ও বাড়ির কাছেই। অভিযোগ, শুক্রবার সকালে অম্বিকা কুণ্ডু বাই লেনে ওই ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে জটুবাবু প্রথমে কেন পুলিশের কাছে ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তা জানতে চান। এ দিনই পুলিশের কাছ থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। অভিযোগ, প্রদীপবাবু অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে না বলে জানিয়ে দিলে জটুবাবু উত্তেজিত হয়ে মারধর শুরু করেন। মারের চোটে প্রদীপবাবুর ঠোঁট ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। বাধা দিতে গেলে আক্রান্ত হন প্রদীপবাবুর স্ত্রী অনিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন বিকেলে অনিতাদেবী বলেন, “সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ জটুদা হঠাৎ বাড়িতে ঢুকে পড়ে ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে করা এফআইআর তুলে নিতে হুমকি দেন। আমার স্বামী না তুলতে চাইলে ওকে কিল, চড়, লাথি, ঘুসি মারতে শুরু করেন। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারেন।”

ওই দম্পতির অভিযোগ, এই ঘটনার পর তাঁরা স্থানীয় জগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। জানিয়ে দেওয়া হয় বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেওয়া যাবে না। পরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে পুলিশ কমিশনারের অফিসে জমা দেন ওই দম্পতি।

মারধরের এই অভিযোগ নিয়ে জটুবাবুকে এ দিন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এ সব আমি কিছুই করিনি। কারও বাড়িতে যাইনি। কী ঘটেছে তা থানা বলবে। আমি কিছু জানি না। ওরা ব্যাঙ্কের টাকা চুরি করে এ সব বলছে।”

কিন্তু শাসকদলের বিধায়ক বলেই কি পুলিশ ওই দম্পতির অভিযোগ নেয়নি?

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “না, এ কথা ঠিক নয়। অভিযোগের অবশ্যই তদন্ত হবে। থানা নেয়নি তো কী হয়েছে। আমার অফিসে জমা পড়েছে তো!”

couple beaten tmc mla accused jotu lahiri shibpur southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy