হুগলির দাদপুরের মহেশ্বরপুরে সারা বাংলা আলুচাষি সংগ্রাম কমিটির অবরোধ। শুক্রবার দীপঙ্কর দে’র ছবি।
হাওড়াতেও ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে আলু কিনবে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর। আজ শনিবার থেকে উদয়নারায়ণপুরে চাষিদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে আলু কেনা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়। সাড়ে পাঁচ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে দরে আলু কেনা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
বেশি ফলন হওয়ার জন্য এই মরসুমে চাষিরা আলুর দাম পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় অন্য রাজ্যে আলু রফতানি করার সিদ্ধান্তের সঙ্গে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলি থেকে আলু কেনা শুরু হলেও হাওড়া সেই তালিকায় ছিল না।
অথচ হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুর, আমতা ২, জগৎবল্লভপুর প্রভৃতি ব্লকে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আলু চাষ হয়। শুধুমাত্র উদয়নারায়ণপুরেই এই মরশুমে ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর। রাজ্যের অন্যান্য অংশের সঙ্গে উদয়নারায়ণপুরেও আলুর ফলন এ বারে বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু এই ব্লকে হিমঘর রয়েছে মাত্র ৫টি। সেখানে স্থানাভাবের জন্য সব চাষি আলু রাখতে পারবেন না। এই অবস্থায় কম দামে অনেক চাষি আলু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এই এলাকার চাষিরা দাবি জানিয়েছিলেন, অন্য রাজ্যে যেন আলু রফতানি করার অনুমতি দেওয়া হয় এবং নুন্যতম সহায়ক মূল্যে যেন সরকার আলু কেনার ব্যবস্থা করে। কিন্তু নুন্যতম সহায়ক মূল্যে রাজ্য জুড়ে যখন আলু কেনা শুরু হয়েছে সেই তালিকায় হাওড়ার নাম ছিল না।
রাজ্য কৃষি বিপনন দফতর সূত্রের খবর, আলু উৎপাদক জেলা হিসাবে হাওড়া চিহ্নিত নয়। তার ফলেই এই তালিকায় হাওড়াকে প্রথম দিকে রাখা হয়নি।
শুক্রবার আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র মহাকরণে গিয়ে কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে দেখা করে হাওড়াতেও ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনার দাবি জানান। এরপরেই মন্ত্রী তাঁর দফতরের যুগ্ম সচিবকে ডেকে হাওড়া থেকে নুন্যতম সহায়ক মূল্যে আলু কেনার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের দফতর থেকে হাওড়ার জেলা শাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজার অবশ্য বক্তব্য: ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে আলু কেনার সঙ্গে সঙ্গে চাষিদের অন্য কোনও উপায়ের কথা ভাবা যায়। চাষিদের প্রচুর বস্তা কিনতে হয়। বস্তা প্রতি দাম পড়ে ১০ টাকা করে। চাষিদের এই বস্তার টাকার উপরে সরকার ভরতুকি দিতে পারে। তাতে চাষিদের আলু বাজারজাত করার খরচ অনেকটা কমবে। ফলে তাঁরা ক্ষতি কমাতে পারবেন। এমনকী হিমঘরে আলু রাখার জন্য যে খরচ হয়, তাতেও সরকার কিছুটা ভরতুকি দিতে পারে।
এ বিষয়ে কৃষি বিপণনমন্ত্রী বলেন, “চাষিদের কাছ থেকে যে আলু কেনা হচ্ছে তার দাম দেওয়া হচ্ছে বস্তা-সহ। ফলে চাষিরা বস্তার জন্য ভরতূকি পেয়েই যাচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy