Advertisement
E-Paper

হল্ট স্টেশনগুলোর যেন দুয়োরানির দশা

লাইনে ট্রেন চালু হওয়ার সময় থেকেই স্টেশনের অবস্থা খারাপ। যাত্রীদের তা নিয়ে ভোগান্তিও দীর্ঘদিনের। কখন ট্রেন আসবে তার কোনও ঘোষণার ব্যবস্থাই নেই স্টেশনে। স্টেশন চত্বরের একদিকে সামান্য অংশে ছাউনি থাকলেও তার অবস্থা খারাপ। বাকি অংশে রোদ-বৃষ্টি মাথায় করেই চলে ওঠানামা বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। ভাঙাচোরা প্ল্যাটফর্ম, মহিলাদের জন্য শৌচাগার থাকলেও তা জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই।

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৩
বেহাল জালালসি স্টেশন। ইনসেটে, ঝোপে ঢেকেছে মহিলাদের শৌচাগার। ছবি: সুব্রত জানা।

বেহাল জালালসি স্টেশন। ইনসেটে, ঝোপে ঢেকেছে মহিলাদের শৌচাগার। ছবি: সুব্রত জানা।

লাইনে ট্রেন চালু হওয়ার সময় থেকেই স্টেশনের অবস্থা খারাপ। যাত্রীদের তা নিয়ে ভোগান্তিও দীর্ঘদিনের। কখন ট্রেন আসবে তার কোনও ঘোষণার ব্যবস্থাই নেই স্টেশনে। স্টেশন চত্বরের একদিকে সামান্য অংশে ছাউনি থাকলেও তার অবস্থা খারাপ। বাকি অংশে রোদ-বৃষ্টি মাথায় করেই চলে ওঠানামা বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। ভাঙাচোরা প্ল্যাটফর্ম, মহিলাদের জন্য শৌচাগার থাকলেও তা জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। তবু বছরের পর বছর এ ভাবেই চলছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-আমতা শাখার হল্ট স্টেশনগুলো। প্রতি বছর রেল বাজেটে যাত্রী স্বাচ্ছন্দের কথা বলা হলেও এই শাখার স্টেশনগুলোয় সেই বার্তা আর পৌঁছয়নি। রেল কর্তৃপক্ষেরও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর শাখার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই শাখায় স্টেশনগুলোর সমস্যার কথা জানি। এই মূহূর্তে কিছু করা সম্ভব নয়। তবে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সমস্ত জানাবো। বরাদ্দ এলেই সংস্কারের কাজও শুরু করা হবে।”

ভাঙাচোরা প্ল্যাটফর্ম। মেঝেয় টাইলস তো দূরের কথা, সিমেন্ট পর্যন্ত করা নেই। তার ওপর প্ল্যাটফর্মগুলি এতটাই নীচু যে যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা করতে রীতিমত লম্ফ দিতে হয়। মহিলা এবং বয়স্ক যাত্রীদের ক্ষেত্রে এতে যে কি বিপদ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। অথচ এই সব সমস্যা বার বার রেল কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও আজ পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ যাত্রীদের।

হাওড়া-আমতা শাখায় অন্যতম জালালসি স্টেশনে গিয়ে টের পাওয়া গেল যাত্রীদের যন্ত্রণা। গোটা স্টেশনের একদিকে রয়েছে একটি মাত্র যাত্রী ছাউনি। তাও অত্যন্ত ছোট। নেই ট্রেন আসার কোনও ঘোষণার ব্যবস্থা। শৌচালয় থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য। এই স্টেশনে নিত্য ট্রেন ধরে কলকাতায় যাতায়াত করেন নিশীথ পণ্ডিত। তিনি বলেন, “স্টেশনের যা অবস্থা তাতে রোজ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বাড়ির লোকজন চিন্তায় থাকে। কিন্তু উপায়ই বা কী? রেল কর্তৃপক্ষকে বার বার সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।”

রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া থেকে আমতা ৫২ কিলোমিটার দূরত্ব। সাঁতরাগাছি থেকে আমতা পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন। এর মধ্যে ১১টি স্টেশনই হল্ট স্টেশন। ১৯৮৪ সালে বড়গাছিয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৯-’১০ সালে বড়গাছিয়া থেকে আমতা পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারিত হয়। এই সমস্ত স্টেশনগুলির পরিকাঠামো একটু ভাল হলেও হল্ট স্টেশনগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। স্টেশনগুলিতে এখনও পর্যন্ত ট্রেন আসা-যাওয়ার সময় মাইকে কোনও ঘোষণা করা হয় না। ফলে যাত্রীরা ট্রেনের সময়সীমা বুঝতে পারেন না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁদের ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কখন ট্রেন আমতা থেকে ছাড়ছে বা ট্রেন কতদূর এল তা জানতে হয় সহযাত্রীদের মোবাইলে ফোন করে। টাইমটেবিল থাকলেও তার সঙ্গে ট্রেন চলাচলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই অভিযোগ যাত্রীদের।

রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই সব স্টেশন সংস্কারের জন্য বাজেটে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ফলে এই শাখার যাত্রীদের আর কতদিন ভুগতে হবে তা কেউ জানে না।

amta monirul shaikh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy