প্রতীকী ছবি।
ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতীদের একটা বড় অংশই পড়তে চান পদার্থবিদ্যা, গণিত, রাশিবিজ্ঞান, এমনকি অর্থনীতি নিয়ে।
মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের ছাত্র, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় শাশ্বত রায় যেমন চান পদার্থবিদ হতে। চতুর্থ স্থানাধিকারী, ইসলামপুর হাই স্কুলের ছাত্র সায়নকুমার দাসেরও পছন্দ পদার্থবিদ্যা। সব মিলিয়ে পঞ্চম এবং মেয়েদের মধ্যে প্রথম, যাদবপুর বিদ্যাপীঠের অভ্রদীপ্তা ঘোষ পড়তে চান রাশিবিজ্ঞান নিয়ে।
পদার্থবিদ্যারই পাল্লা ভারী। পঞ্চম হওয়া বহরমপুর জে এন অ্যাকাডেমির শুভাশিস ঘোষ এবং পাণ্ডুয়া শশীভূষণ সাহা হাই স্কুলের সরিফুল ইসলাম, অষ্টম স্থানে থাকা বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের দেবশুভ্র চক্রবর্তী— সকলেরই পড়ার ইচ্ছে পদার্থবিদ্যা নিয়ে। কল্যাণীর স্প্রিং ডেল হাই স্কুলের অনুশ্রী মজুমদার রাজ্যে নবম। অর্থনীতিতে ১০০ পাওয়া অনুশ্রীর ইচ্ছে, ওই বিষয়েই গবেষণা করবেন। তমলুক ডিমারি হাইস্কুলের ছাত্র, নবম হওয়া সৌমেন মাজি পড়তে চান জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা। দশম স্থানাধিকারী রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের রূপম পালের প্রিয় পদার্থবিদ্যাই।
১৯৭৮ সালের মাধ্যমিক এবং ১৯৮০ সালের উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় হয়েছিলেন সোমক রায়চৌধুরী। জ্যোতির্পদার্থবিদ সোমকবাবু শনিবার বললেন, ‘‘এক সময়ে বিজ্ঞান পড়ার জন্য প্রচার চালাতাম। এখন মেধাবীরা আগ্রহী হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে।’’ তাঁর মতে, ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য অভিভাবক ও শিক্ষকদের দিক থেকেও চাপ থাকে। সেই চাপ কাটিয়ে উঠছেন ছাত্রছাত্রীরা।
১৯৯১ সালের মাধ্যমিকে ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম এবং সব মিলিয়ে অষ্টম হয়েছিলেন ঋতুপর্ণা সেন। রাশিবিজ্ঞান নিয়ে পড়ে ঋতুপর্ণা এখন চেন্নাইয়ে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষিকা। মেধাবী পড়ুয়াদের বিজ্ঞান পড়ার ঝোঁক বাড়ছে দেখে সন্তুষ্ট তিনি। ঋতুপর্ণা মনে করেন, ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো পেশাদারি পাঠ্যক্রমের বাইরে গবেষণাধর্মী বিষয় নিয়ে পড়ারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ দত্তের কথায়, ‘‘বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে পড়া এবং গবেষণারও প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে সভ্যতা এগোয় না। শুধুই ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া হলে উচ্চশিক্ষাতেও ভারসাম্য থাকে
না।’’ সোমকবাবু এবং সিদ্ধার্থবাবু দুজনেরই মতে, এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের চাকরির ক্ষেত্রে মন্দা। এই পরিস্থিতিও মেধাবীদের বিজ্ঞান পড়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy