বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়ম রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপের পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় পেশ হচ্ছে ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট’ বিল। তার খসড়া থেকে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যু বা ক্ষতির অভিযোগ প্রমাণ হলেই হাসপাতালকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করার পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। খুব গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রেও আর্থিক কারণে চিকিৎসা না করা, রোগীর পরিবার টাকা মেটাতে না পারায় মৃতদেহ আটকে রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ করানোর যে ভূরি ভূরি অভিযোগ বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ওঠে, তা রুখতে কঠোর ফৌজদারি পদক্ষেপের ব্যবস্থাও বিলে থাকছে।
বিল বিধানসভায় পেশ হওয়ার আগে এক ঝলকে জেনে নেওয়া যাক তার কয়েকটি সংস্থান:
১. চিকিত্সায় গাফিলতির জেরে রোগীর মৃত্যু হলে ন্যূনতম জরিমানা হবে ১০ লক্ষ টাকা।
২. চিকিত্সায় গাফিলতির জেরে রোগীর সামান্য ক্ষতি হলে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
৩. একই কারণে রোগী বড় ক্ষতির সম্মুখীন হলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
৪. দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ধর্ষণ ও অ্যাসিড হামলার মতো ক্ষেত্রে আর্থিক সংস্থান না দেখে চিকিৎসা করতে হবে।
বিধানসভায় সরকার পক্ষের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাতে বিল পাস করাতে সমস্যা হবে না। —ফাইল চিত্র।
৫. মৃতের পরিবারের কাছে টাকা না থাকলে দেহ আটকে রাখা যাবে না।
৬. টাকার অভাবে জীবনদায়ী ওষুধ কিংবা চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।
৭. অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করিয়ে খরচ বাড়ানো যাবে না।
৮. প্যাকেজ-ভুক্ত চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমে এক রকম খরচের কথা বলে পরে বাড়তি খরচ চাপানো যাবে না।
৯. বিধি অমান্য করলে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন।
আরও পড়ুন: অ্যাপোলোর সিইও পদ থেকে সরে যেতে হল রূপালি বসুকে
বিলটির খসড়া বিধায়কদের মধ্যে বিলি হয়েছে। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, ঠিক কী ধরনের সংস্থান থাকতে চলেছে বিলে। তবে চিকিৎসায় গাফিলতি বা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা শুধু বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে। সরকারি হাসপাতাল কিন্তু এই বিলের আওতায় আসছে না।