Advertisement
E-Paper

জেসপে কী হচ্ছে জানতাম না, জেরায় দাবি রুইয়ার

তদন্ত সংস্থার কাছে জেসপের কর্মী-অফিসারদের দাবি, দমদমে তাঁদের কারখানার ছোট-বড় যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে নিয়মিতই খোঁজখবর রাখতেন শিল্পপতি পবন রুইয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২৩
ব্যারাকপুর আদালতে যাওয়ার পথে। রবিবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

ব্যারাকপুর আদালতে যাওয়ার পথে। রবিবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

তদন্ত সংস্থার কাছে জেসপের কর্মী-অফিসারদের দাবি, দমদমে তাঁদের কারখানার ছোট-বড় যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে নিয়মিতই খোঁজখবর রাখতেন শিল্পপতি পবন রুইয়া। অথচ গোয়েন্দাদের জেরায় খোদ রুইয়ার দাবি, জেসপে কী হচ্ছে, তিনি তা জানতেন না। সংস্থার দৈনন্দিন কাজকর্মের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না।

রেলের দায়ের করা প্রতারণার মামলায় ধৃত রুইয়ার আইনজীবীদের বক্তব্য, তাঁদের মক্কেল ২০০৮ সালের মার্চেই জেসপের ডিরেক্টর-পদ ছেড়ে দেন। তাই ২০১২ সালে রেলের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জেসপ কাজ করেনি বলে যে-অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে রুইয়ার কোনও দায়দায়িত্ব থাকতে পারে না। সিআইডি সূত্রের খবর, রবিবার আদালত থেকে ভবানী ভবনে পৌঁছনোর পরে গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মুখে রুইয়া দাবি করেন, তিনি রুইয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান। তাই জেসপে প্রতিদিন কী হচ্ছে না-হচ্ছে, তাঁর পক্ষে সেটা জানা সম্ভব নয়। রেলের সঙ্গে জেসপের চুক্তির ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও তদন্তকারী অফিসারদের কাছে জানান রুইয়া।

গোয়েন্দারা অবশ্য জানাচ্ছেন, জেসপ নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পরে সেখানকার কর্মী থেকে উচ্চপদস্থ কর্তা, সকলেই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে দাবি করেন, জেসপের যাবতীয় খুঁটিনাটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন রুইয়া। যদিও সিআইডি-র জেরার জবাবে রুইয়া সেই বক্তব্য মানতে রাজি হননি। এই অবস্থায় জেসপের কর্মী এবং পদস্থ কর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ, জেসপ-কর্তৃপক্ষের কাছে গোয়েন্দারা বারবার সংস্থার অডিট রিপোর্ট চেয়েও পাননি। সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে কারখানার মূল অফিসের চাবিও পাননি তাঁরা।

এর আগে জেসপ-কাণ্ডের তদন্তে নেমে ওই সংস্থার সাত জন অফিসারকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই সাত জনের মধ্যে দু’জন সিআইডি-র কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেই জবানবন্দিতে দুই অফিসার জানিয়েছেন, জেসপের প্রতিটি বিষয়ই উপরমহলকে জানানো হতো। এ দিন জেরার মুখে রুইয়াকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সংস্থার বোর্ড অব ডিরেক্টরসের বৈঠকে তো সংস্থার খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তার পরেও রুইয়া কী ভাবে দাবি করছেন যে, তিনি কিছুই জানেন না? সিআইডি-র খবর, এই ধরনের সমস্ত প্রশ্নের মুখেই জেসপ-কর্তা বারবার বলতে থাকেন, তিনি কিছুই জানতেন না।

ভবানী ভবন সূত্রের খবর, সোমবারেই জেসপের তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সবিস্তার তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, ওই তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে। কেন এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে এ ভাবে মোটা টাকা সরানো হয়েছে, রুইয়ার কাছে তার সবিস্তার তথ্য জানতে চাইবে তদন্তকারী সংস্থা।

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমে জেসপের কারখানায় অগ্নিকাণ্ড এবং চুরির ঘটনা সামনে আসার পরে রেল-কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেন, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জেসপকে সাতটি এসি রেক এবং আরও কিছু সরঞ্জাম তৈরির জন্য অগ্রিম বাবদ ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়াও দেওয়া হয় প্রচুর কাঁচামাল। কিন্তু চুক্তি মেনে রেক তৈরি করেনি জেসপ। কাঁচামালেরও হিসেব দেয়নি। কাজ না-হওয়ায় রেল ২৫ নভেম্বর দমদম থানায় অভিযোগ দায়ের করে। সেই মামলাতেই গত শনিবার দিল্লির সুন্দরনগরের বাড়ি থেকে রুইয়াকে গ্রেফতার করেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা।

Jessop Pawan Ruia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy