Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Jawhar Sircar

Jawhar Sircar: তাঁকে নিয়ে বিড়ম্বনায় দল, সাংসদ জহর বলছেন, মমতা চাইলে পদত্যাগ করতে তৈরি

তাঁর বক্তব্য সামনে আসার পরে মঙ্গলবার সারা দিন তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে এটি ছিল অন্যতম চর্চার বিষয়। দলে কারও কারও মতে, জহরের পদত্যাগ করা উচিত।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললে পদত্যাগ করতে রাজি জহর সরকার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললে পদত্যাগ করতে রাজি জহর সরকার। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ০৬:২১
Share: Save:

বছরখানেক আগে তৃণমূলের রাজ্যসভা সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে পা রাখা প্রাক্তন আমলা জহর সরকারকে নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব ‘বিড়ম্বনায়’ পড়েছেন। জহর দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অনুব্রত মণ্ডলদের উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘‘পচে যাওয়া অংশ বর্জন করতে হবে।’’ তাঁর আরও দাবি, নিজের পরিবার এবং বন্ধুমহল থেকেও তাঁকে ক্রমাগত বলা হচ্ছে, ‘তৃণমূল ছেড়ে চলে এসো।’

সোমবার তাঁর এই বক্তব্য সামনে আসার পরে মঙ্গলবার সারা দিন তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে এটি ছিল অন্যতম চর্চার বিষয়। দলে কারও কারও মতে, জহরের পদত্যাগ করা উচিত। কেউ কেউ আবার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কথাও তোলেন।

তবে এ দিন জহরের বক্তব্য, ‘‘যিনি আমাকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি যদি ক্ষুব্ধ হন এবং চলে যেতে বলেন, পদত্যাগ করে চলে যাব।’’

উল্লেখ্য, জহরকে রাজ্যসভায় যাওয়ার প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন খোদ মমতা। তৎক্ষণাৎ তা গ্রহণও করেছিলেন জহর। আর তার এক ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল এই প্রাক্তন আমলার নাম ঘোষণা করেছিল।

এ দিন দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘প্রয়োজনে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে জহরবাবুর বক্তব্যের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আমরা এখন কিছু বলছি না।’’ প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় অবশ্য সরাসরি জহরের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাঁর কথা, ‘‘সাহস থাকলে জহরবাবু পদত্যাগ করুন। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির পদক্ষেপ করা উচিত।’’

রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘জহরবাবু অভিজ্ঞ মানুষ। কোনও বিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মত থাকতেই পারে। তবে দলে থেকে তা প্রকাশ্যে বলার অধিকার আছে কি না, সেটাও তাঁর মতো মানুষকে বুঝতে হবে।’’ তৃণমূলের আর এক নেতা আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেবও টুইট করে জহরের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে নেমে পড়েছে বিজেপি। টুইট করে দলের কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালবীয়ের কটাক্ষ, ‘‘জহর সরকারের মতো একজন আপাত নিরীহ মানুষও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হেফাজত থেকে নগদ উদ্ধারের ন্যক্কারজনক ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন। এতেই বোঝা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে বিষয়টি কত খারাপ জায়গায় যাচ্ছে।’

জহর অবশ্য পাল্টা লিখেছেন, ‘অমিত মালবীয় তথ্য বিকৃত করছেন। আমি তৃণমূল, বিজেপি সব দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধেই বলেছি।’ তাঁর আরও দাবি, ‘তৃণমূলে থেকে নিজের মত প্রকাশ করতে পারি। বিজেপির কেউ কি দু’টি বড় শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের দলের অসাধু আঁতাতের কথা বলতে পারবেন?’

জহর সোমবার বলেছিলেন, ‘‘প্রতিমাসে ভাবি যে, ছেড়ে দিতে পারি। তবে কোনওদিন যদি সম্মানহানি হয় ছেড়ে দেব।’’ রাজ্যসভায় তাঁকে যে এক বছরে কার্যত কথা বলতে দেওয়া হয়নি সেই ক্ষোভও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এ দিন তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, মমতা যদি না চান, তিনি দলে থাকবেন না। দল যদি তাঁর বিষয়টি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে নিয়ে যায়, কী করবেন? জহরের জবাব, ‘‘অনুমানের ভিত্তিতে কোনও কথা বলব না। আবারও বলছি, আত্মসম্মান আমার কাছে সব থেকে বড়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jawhar Sircar Mamata Banerjee TMC Rajya Sabha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE