Advertisement
E-Paper

রাজ্য জুড়ে অবৈধ অস্ত্র কারখানা, যাচ্ছে ও-পারেও

সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, কলকাতা শহরের বন্দর ও পার্ক সার্কাসের ঘিঞ্জি এলাকাতেও অস্ত্র কারখানা তৈরি করেছে কারবারিরা।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০৪:১৫

অবৈধ অস্ত্রের ভাণ্ডার হিসেবে বিহারের মুঙ্গেরের শিরোপা কেড়ে নেওয়ার পথে পশ্চিমবঙ্গ। গত কয়েক মাস ধরে অবৈধ অস্ত্র-কারবারিদের ওপর নজরদারি রেখে এ বিষয়ে কার্যত নিঃসন্দেহ হয়েছে রাজ্য পুলিশ ও সিআইডি।

রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে অস্ত্রের চাহিদা তুঙ্গে। আবার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকেও যথেষ্ট বরাত মিলছে। কৌশল বদলে তাই এ রাজ্যেই জায়গায় জায়গায় কারখানা খুলে অবৈধ অস্ত্র তৈরি করছে মুঙ্গেরের কারিগররা। আর তাদের মাথায় হাত রয়েছে বাংলার কিছু রাজনৈতিক নেতার।

রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, অস্ত্র কারবারিদের গতিবিধিতে নজরদারি চালিয়েই তাদের কৌশল বদলের বিষয়টি জানা গিয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, হুগলি, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতা শহর লাগোয়া কয়েকটি এলাকায় বেশ কিছু অস্ত্র কারখানা চলছে। ছবিটা স্পষ্ট হওয়ার পরে পুলিশ কর্তাদের কপালের ভাঁজ আরও গভীর হয়েছে। রাজ্য পুলিশ ও সিআইডি-র জালে অস্ত্র কারবারিরা ধরা পড়েছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গায় অস্ত্র কারখানার হদিসও মিলেছে। গত এক বছরে কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় তল্লাশি চালিয়ে মুঙ্গেরের কারিগরদের তৈরি শ’তিনেক পিস্তল উদ্ধার করছে পুলিশ।

সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, কলকাতা শহরের বন্দর ও পার্ক সার্কাসের ঘিঞ্জি এলাকাতেও অস্ত্র কারখানা তৈরি করেছে কারবারিরা। মুঙ্গের থেকে কারিগর ও মেশিন নিয়ে এসে ওই সব কারখানায় ৭ এমএম, ৯ এমএম পিস্তল ও ওয়ান শর্টার তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের এক র্শীষ কর্তার কথায়, মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি ও ডোমকলেও একাধিক অস্ত্র কারখানা চালু থাকার খবর মিলেছে। ওই সব কারখানা চালানোর জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মদতও রয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনের শীর্ষ মহলেও জানানো হয়েছে।

ধৃত অস্ত্র কারবারিদের জেরা করে জানা গিয়েছে, এ রাজ্য রাজনৈতিক সংর্ঘষ ও গোষ্ঠী সংর্ঘষের কারণে মুঙ্গেরি অস্ত্রের চাহিদা এখন বিপুল। বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর বরাত আসছে। পাহারা এড়িয়ে মুঙ্গের থেকে রেল বা সড়ক পথে এত বিপুল অস্ত্র নিয়ে আসাটা ঝুঁকির। সেই কারণেই রাজ্যে কারখানা তৈরি করে সেখানে তৈরি অস্ত্র চাহিদা অনুয়ায়ী হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এ ভাবে লক্ষাধিক মুঙ্গেরি পিস্তল ছড়িয়ে গিয়েছে বলে অনুমান করছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।

রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশেও পাচার হয়েছে বিপুল মুঙ্গেরি অস্ত্র। বাংলাদেশের জঙ্গিদের কাছে ওই অস্ত্র পৌঁছে যাচ্ছে কি না, তাও এখন খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এক তদন্তকারীর কথায়, মাস ছয়েক আগে মুঙ্গেরের এক অস্ত্র কারবারির ফোনে আড়ি পেতে শোনা গিয়েছিল— তিনটি সেভেন এমএম ‘বাংলা-পার্টির’ হাতে তুলে দেওয়া হল। ওই ফোনের সূত্র ধরেই বনগাঁ সীমান্ত থেকে চারটি ৭ এমএম পিস্তল-সহ এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় জানা যায়, বাংলাদেশের এক জনকে ওই অস্ত্র পাচােরর বরাত দেওয়া হয়েছিল।

পুলিশ কর্তাদের কথায়, বিহারীলাল নামে মুঙ্গেরের এক অস্ত্র কারবারি এ রাজ্য বেশ কয়েকটি অস্ত্র কারখানা খুলেছে। ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় এখন সেভেন এমএম পিস্তল মিলছে। মাসে প্রায় কোটি টাকার ব্যবসা করছে বিহারীলাল।

Illegal arms arms factory অস্ত্র অস্ত্র কারখানা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy