Advertisement
E-Paper

বাইসি বাজার থেকে বোমা বাংলায়

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়ি অভিমুখী ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ৪৭ কিলোমিটার গেলে ডালখোলার পূর্ণিয়া মোড়। সেখান থেকে পশ্চিম দিক ধরে আরও ১১ কিলোমিটার গেলে বিহারের পূর্ণিয়া জেলার বাইসি বাজার।

গৌর আচার্য 

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ০৬:১০
বাইসির বাজি বাজার। নিজস্ব চিত্র।

বাইসির বাজি বাজার। নিজস্ব চিত্র।

‘অ্যাটম বোমা’ নেই। তবে চকলেট বোমা, লঙ্কা বোমা, সিগারেট বোমা, হাওয়াই সাউন্ড-সহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ শব্দবাজি আছে অগুনতি। মুদির দোকান ও স্টেশনারি দোকানের সামনে চৌকিতে থরে থরে সাজানো। দামও অনেক। প্রশ্ন করতেই দোকানদার বললেন, ‘‘বাংলা থেকে আসছেন? ছটপুজোয় বাজি ফাটাবেন? কালীপুজো ও ছটপুজোর জন্য সব বোমা বাংলাতেই চলে যাচ্ছে। তাই দাম একটু বেশি।’’

শক্তিশালী বাজি এলাকায় এল কী করে? নতুন করে এ প্রশ্ন তুলে দিয়েছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার আঁকুড়া গ্রামে ‘অ্যাটম বোমা’ ফেটে যুবকের মৃত্যু। তাই নিষিদ্ধ শব্দবাজির খোঁজ করতে করতে সোজা বাইসি বাজারে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়ি অভিমুখী ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ৪৭ কিলোমিটার গেলে ডালখোলার পূর্ণিয়া মোড়। সেখান থেকে পশ্চিম দিক ধরে আরও ১১ কিলোমিটার গেলে বিহারের পূর্ণিয়া জেলার বাইসি বাজার।

দুপুর দুপুর নাগাদ সেখানে পৌঁছে দেখা গেল, মানুষজন কিছুটা কম। তবে বাজি সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। দাম কত? দেখা গেল, এক একটি বড় চকোলেট বোমা ২০ টাকা করে। ১০টার প্যাকেট নিলে ১৯০ টাকা। এত দাম কেন? দোকানদার বললেন, ‘‘৪০০ কিলোমিটার দূরের পটনা থেকে বাজি কিনে আনতে খরচ অনেক।”

আর একটু এগিয়ে দেখা গেল, স্টেশনারি দোকানের সামনে চৌকি পেতে শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে। দোকানদার এক নিঃশ্বাসে বলে গেলেন, ‘‘লঙ্কা বোমার প্যাকেট ৩০ টাকা, সিগারেট বোমার প্যাকেট ৫০ টাকা, হাওয়াই সাউন্ড এক প্যাকেট ১২০ টাকা। বাকি সমস্ত ধরনের বোমার প্যাকেট ৪০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।”

সে সব বাজি কিনে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ ধরবে না তো? হাসেন দোকানদার। দাবি করেন, ‘‘দুর্গাপুজোর পর থেকে রায়গঞ্জ, ডালখোলা, ইসলামপুর, করণদিঘির মতো উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে কত লোক অটো, ছোট গাড়ি, মোটরবাইক ও যাত্রিবাহী গাড়িতে করে খুচরো ও পাইকারি দরে বাংলায় বোমা নিয়ে যাচ্ছে! সেখানে কেউ বিক্রি করছে, কেউ ফাটাচ্ছে। ছটপুজো পর্যন্ত এখান থেকেই বাংলায় বেশির ভাগ বোমা যায়।”

পূর্ণিয়া মোড় থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বাংলা-বিহার সীমানা। বৃহস্পতিবার দিন অন্তত কোনও নজরদারি ছিল না সেখানে। না এ-রাজ্যে, না ও-রাজ্যে। প্রশ্ন উঠেছে, এই যে কালীপুজোর রাত থেকে এত শব্দবাজি ফাটছে জেলায়, তা কি বিহার থেকে এই পথেই এসেছে? কেন নেই প্রয়োজনীয় নাকা চেকিং? রায়গঞ্জ পুলিশ-জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার ও ইসলামপুর পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল দাবি করেন, বিহার থেকে জেলায় শব্দবাজি ঢোকা রুখতে নাকা-তল্লাশি ও নজরদারি রয়েছে।

বাইসির বাজি-অভিজ্ঞতা অবশ্য সে কথা বলছে না।

Illegal crakers Bihar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy