Advertisement
E-Paper

নন্দকুমারে বাম-বিজেপি জোট! গেরুয়া গন্ধ যাতে নিচু তলায় না যায়, তার জন্য কমিশন সিপিএমে

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে বহরমপুর সমবায় সমিতির নির্বাচনে ৬৩-০ ফলে জয়ী হয়েছে ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’। তৃণমূলের অভিযোগ, বাম ও বিজেপি সমঝোতা করে ওই মঞ্চের নামে সমবায় জিতেছে।

 সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২ ০৭:২১
সমবায়-কাণ্ডে অভ্যন্তরীণ কমিশন গড়ার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম।

সমবায়-কাণ্ডে অভ্যন্তরীণ কমিশন গড়ার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে রুখতে সব বিরোধীকে একজোট হওয়ার ডাক দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। সেই আহ্বান বারেবারেই নাকচ করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। আবার এরই মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি সমবায় সমিতিতে বাম-বিজেপির জোট বেঁধে তৃণমূলকে হারিয়ে দেওয়ার প্রচার সামনে এসেছে। সেই অভিযোগও সিপিএম খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপির গন্ধ যাতে নিচু তলায় অনুপ্রবেশ না করে, সে দিকে নজর রেখে সমবায়-কাণ্ডে অভ্যন্তরীণ কমিশন গড়ার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম।

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে বহরমপুর সমবায় সমিতির নির্বাচনে ৬৩-০ ফলে জয়ী হয়েছে ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’। তৃণমূলের অভিযোগ, বাম ও বিজেপি সমঝোতা করে ওই মঞ্চের নামে সমবায় জিতেছে। ওই সমবায়ের দখল ‘বাম ও প্রগতিশীল শক্তি’র হাতেই ছিল আগে। সমবায় বাঁচাও মঞ্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবৃতি দিয়ে নন্দকুমারের ঘটনায় বিজেপির কোনও যোগসূত্র অস্বীকার করেছে। দলের রংহীন এই ধরনের নির্বাচনে ‘জোট’ প্রতিষ্ঠা করাও মুশকিল। কিন্তু সিপিএম সূত্রের খবর, নন্দকুমারের সমবায় ঘিরে বাম-বিজেপি জোটের তত্ত্ব এমন ভাবে প্রচার পেয়েছে, তার আঁচ এসে পড়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট পর্যন্ত। বিজেপির সঙ্গে কোনও সংস্রব কোনও ভাবে সেখানে সত্যিই ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই কমিশন গড়া হচ্ছে। সিপিএম সূত্রের খবর, কমিশনের দায়িত্বে থাকবেন দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক বর্ষীয়ান সদস্য।

তিন বছর আগের লোকসভা ভোটের সময় থেকেই রাজ্যে ‘বামের ভোট রামে’ যাওয়ার তত্ত্ব ঘুরপাক খাচ্ছে। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে বাম-রামের তত্ত্ব মাথায় রেখেই ‘নো ভোট টু বিজেপি’র ডাক উঠে এসেছিল, যার সুবিধা একতরফা ভাবে পেয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপিকে ভোট চালান করে দেওয়া যে সংগঠিত ভাবে সম্ভব নয়, সেই যুক্তি দিয়ে এমন তত্ত্বের বরাবরই বিরোধিতা করেছে সিপিএম। কিন্তু বিজেপির ছোঁয়াচ সত্যিই লেগে গেল কি না, তার ময়না তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে দলের অভ্যন্তরে কমিশন গড়া এই প্রথম।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘নন্দকুমার নিয়ে সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক প্রচার হয়েছে। সে কথা পরিষ্কার করে আমরা বলেছি। তবু কমিশন গড়া হচ্ছে এই বার্তাটা দলের মধ্যে স্পষ্ট করে দেওয়ার জন্য যে, নিচু তলার বাস্তবতার ভিত্তিতে হলেও বিজেপি বা তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সমঝোতায় দলের কেউ যাবেন, এটা মেনে নেওয়া যাবে না!’’ ওই নেতার মতে, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রায় সিংহ ভাগ ক্ষেত্রে শাসক তৃণমূলের অত্যাচার বা দুর্নীতিতে মানুষ অতিষ্ঠ। সমবায়েও তা-ই। দলীয় ভাবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আঁতাঁত গড়ে তোলার ব্যাপারে।’’

পঞ্চায়েতের মতো নিচু তলার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নিয়ন্ত্রণ সে ভাবে কাজ করে না। স্থানীয় বাস্তবতার ভিত্তিতে তৃণমূল স্তরে সমীকরণ তৈরি হয়ে যায়। তবু বিজেপির কাছে হারানো জমি উদ্ধারে তৎপর সিপিএম এখন গোটা বিষয়ে সতর্ক পদক্ষেপ করতে চাইছে। তাদের আনুষ্ঠানিক আহ্বান, ‘লুটেরা’দের হাত থেকে পঞ্চায়েত মুক্ত করার জন্য বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব মানুষকে একজোট করা হোক। ‘গ্রাম জাগাও, চোর তাড়াও, বাংলা বাঁচাও’ ডাক গিয়ে গ্রামাঞ্চলে এখন পদযাত্রায় আছে সিপিএম।

CPM BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy