বিধানসভা ভোটের আগে বাংলা-বাঙালি নিগ্রহের অভিযোগের পাল্টা হিসেবে পরিযায়ী শ্রমিক-সহ প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে পুজোর মরসুমে দু’দফায় দেশের ২২টি রাজ্যে ঘুরছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, ওই রাজ্যগুলি বাঙালিদের রুটি-রুজির জন্য নিরাপদ, বাংলার ‘প্রকৃত অবস্থা’ কী— এমন অভিজ্ঞতা ও বার্তা তুলে ধরার চেষ্টাও চলছে। এই সূত্রে প্রবাসী হিন্দু-বাঙালি এবং তাঁদের আত্মীয়রা বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে এসে যাতে বিজেপিকে ভোট দেন, সেই আবেদনও জানানো হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতে’র স্লোগানকে সামনে রেখে রাজ্য বিজেপির এই কর্মসূচি। এর অঙ্গ হিসেবে ত্রিপুরায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, গুজরাতের সুরাতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, গুজরাতের আমদাবাদ ও বরোদায় অগ্নিমিত্রা পাল-সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের যাওয়ার কথা রয়েছে বলে খবর। ইতিমধ্যেই ওড়িশায় দলীয় বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, মহারাষ্ট্রে আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচী, চণ্ডীগড়ে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, উত্তরাখণ্ডে লকেট চট্টোপাধ্যায়েরা গিয়েছিলেন। তামিলনাড়ুতে সফর করছেন দলের বিধানসভার সচেতক শঙ্কর ঘোষ।
তামিলনাড়ুতে বাঙালিদের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পুজো, তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্মীদের পুজো মণ্ডপে যাচ্ছেন শঙ্কর। তাঁর বক্তব্য, “এখানে ৩০ বছর ধরে অনেক বাঙালি রয়েছেন। অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবেও এসেছেন। সবার সঙ্গেই কথা বলছি।” সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি-শাসিত ওড়িশায় বাঙালিদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। ওই রাজ্যে ভুবনেশ্বর লাগোয়া বাঙালি অধ্যুষিত বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বঙ্কিমের অবশ্য পাল্টা দাবি, “বাঙালিদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে না।”
চণ্ডীগড়ে বিভিন্ন বাঙালি পরিবারে খাওয়াদাওয়া সেরেছেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল। তাঁর দাবি, “চণ্ডীগড়ে গরিব বাঙালি দেখতে পাইনি। যাঁরা পরিযায়ী, তাঁরাও বাংলার চেয়ে অনেক বেশি মজুরি পান। তাঁরা বলেছেন, ১০ গুণ বেশি টাকা দিলেও পশ্চিমবঙ্গে ফিরবেন না। ওঁরা বাংলার থেকেও নিরাপদে আছেন।” উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে গিয়ে মূলত মতুয়া ও নমঃশূদ্র অধ্যুষিত এলাকায় ঘুরেছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক লকেট। সূত্রের খবর, লকেট সেখানকার বাঙালিরা রাজ্যে মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় যাতে প্রচারে আসেন, সেই আবেদন করেছেন।
মহারাষ্ট্রের ঠানের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সেখানে থাকা কোন কোন পরিযায়ী শ্রমিক বাংলার ভোটার, তাঁদের কত জন আত্মীয় বাংলায় রয়েছেন, ঠিকানা কী, প্রবাসীদের কেউ দলের প্রচারে আসতে চান কি না, সেই সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করেছেন দলের নেতা কৌস্তভ। কয়েকটি এলাকায় অভিজাত আবাসনেও বাঙালিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁর দাবি, “মহারাষ্ট্রের বাঙালিরা বাংলার পরিস্থিতি জানেন। তাঁরা বিজেপির সরকার গঠনে উদগ্রীব।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)