—ফাইল চিত্র।
আসানসোলের ব্যবসায়ী সুরেন্দ্র এবং মহেন্দ্র শর্মার বাড়ি এবং অফিসে শুক্রবারও আয়কর দফতরের অভিযান অব্যাহত। ৫২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা। সুরেন্দ্র এবং মহেন্দ্রের পাশাপাশি, বার্নপুরের ধরমপুরের লোহার ছাঁট ব্যবসায়ী সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদের বাড়িতেও বুধবার থেকে তল্লাশি শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ইমতিয়াজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেও সুরেন্দ্র এবং মহেন্দ্রর বাড়িতে তল্লাশি চলছে।
মহেন্দ্রদের নুন এবং প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ষাটের দশকে রাজস্থান থেকে আসানসোলে এসেছিলেন বাবা ছগনলাল শর্মা। ভাড়া থাকতেন মুন্সি বাজার এলাকায়। মরুরাজ্য থেকে নুন আনিয়ে শিল্পাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন ছগনলাল। পরে ছেলেরাও এই কাজে লেগে যান। পরে তাঁরা নুনের কারখানা তৈরি করেন। ধীরে ধীরে ব্যবসার বিস্তার ঘটে। রেশম সুতোর ব্যবসাও শুরু করে শর্মা পরিবার। ২০০০ সাল নাগাদ প্রোমোটিংয়ের ব্যবসাতেও ঝোঁকেন দুই ভাই। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দুই ভাইই ‘শাসক-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এলাকায়।
বুধবার শাসক তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলির বাড়িতেও তল্লাশি চালাতে যান আয়কর দফতরের কর্তারা। শীতের ভোরে আলো ফোটার আগেই সোহরাবের রহমতনগরের বাড়ি নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সকাল ৬টা নাগাদ তিনটি গাড়িতে এলাকায় আসে আয়কর দফতরের জনা সাতেক অফিসারের একটি দল। প্রায় ২০ ঘণ্টা সেখানে তল্লাশি অভিযান চলে। মূলত ছাঁট লোহার কারবারি বলে পরিচিত সোহরাব। তাঁর বাবা শেখ আলি প্রথমে পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। পরে তিনিই ছাঁট লোহার কারবার শুরু করেন। সেই পেশায় যুক্ত হন সোহরাব। সে সময়ে সোহরাবের সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের বাম নেতাদের ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে নানা সূত্রের দাবি। ১৯৯৫ সালে আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফের পশ্চিম শাখা তাঁর বিরুদ্ধে রেলের যন্ত্রাংশ চুরির মামলা করে। সোহরাব তার পরে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আরজেডি-তে যোগ দেন তিনি। সে বার নির্বাচনে আরজেডি ছিল বামেদের জোটসঙ্গী। তৎকালীন হিরাপুর আসনে বাম সমর্থিত আরজেডি-র প্রার্থী হন সোহরাব। তবে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করার বিরোধিতা করেন কিছু সিপিএম নেতা-কর্মী। দলের হিরাপুরের নেতা দিলীপ ঘোষ নির্দল হিসেবে সেই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দিলীপের সঙ্গে দল ছাড়েন বেশ কিছু কর্মী। পরে অবশ্য তাঁদের দলে ফেরানো হয়। ওই ভোটে জিতেছিলেন মলয় ঘটক। ভোটে হারার পরে আরজেডি ছাড়েন সোহরাব। ২০০৪ সালে তিনি আরএসপি-র টিকিটে আসানসোল পুরভোটে প্রার্থী হন। এর পর ২০১০ সালে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ২০১১ সালে রানিগঞ্জ থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তখন থেকে তৃণমূলের সক্রিয় নেতা হিসাবেই এলাকায় পরিচিত সোহরাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy