Advertisement
E-Paper

Independence Day 2022: স্কুলে গিয়ে জাতীয় পতাকা কবে তুলবেন

ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে স্মৃতিচারণ করছিলেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি আসছে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২২ ০৬:৫১
ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে স্মৃতিচারণ করছিলেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা।

ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে স্মৃতিচারণ করছিলেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। ফাইল চিত্র।

এক মাস ধরে অনুষ্ঠানের মহড়া। তার পর জাতীয় পতাকা তোলা। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া। আর অনুষ্ঠানের পরে প্রাপ্তি একটা সন্দেশ, দুটো বিস্কুট আর একটা টফি। সন্দেশ আর বিস্কুট স্কুলেই খেয়ে ভাই বা বোনের জন্য টফি নিয়ে যাওয়া।

ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে স্মৃতিচারণ করছিলেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি আসছে। বৃষ্টির জল আটকাতে মাথার উপরে ত্রিপল ঠিক করতে হচ্ছে। তার ফাঁকেই তাঁরা বলছিলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া ঠিকঠাক হলে আমাদেরও এত দিনে শিক্ষক হওয়ার কথা। জাতীয় সঙ্গীত গাইতাম। জাতীয় পতাকা তোলা হত। কিন্তু এখনও রাস্তায় বসে আর্থিক স্বাধীনতা, সামাজিক স্বীকৃতির স্বাধীনতার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের স্বাধীনতা কবে আসবে?”

নবম থেকে দ্বাদশের প্রার্থী ইলিয়াস বিশ্বাস, প্রকাশ ঘোষ, শহিদুল্লা, সঞ্চিতা শর্মা, সোমা বিশ্বাসরা জানান শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা—রাস্তাতেই আন্দোলনে কেটে যায়। স্বাধীনতা দিবস থেকে শুরু করে সরস্বতী পুজো, ইদ, সবই রাস্তায় উদ্‌যাপন। তাঁদের নিয়োগের দাবির লড়াই শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন বিক্ষোভ দিয়ে। প্রেস ক্লাব থেকে সল্টলেকের করুণাময়ী, তারপর এখন গান্ধী মূর্তির পাদদেশ। তিন জায়গায় ধর্না অবস্থান চলছে ৫১৯ দিন পার করে। পানীয় জল বা শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। তার মধ্যেই বাচ্চা কোলে নিয়ে বসে থেকেছেন মহিলা চাকরিপ্রার্থীরা। মাঝেমধ্যে পুলিশের তাড়া তো আছেই।

ইলিয়াস বলেন, “ভেবেছিলাম, ১৫ অগস্টও আমরা গান্ধী মুর্তির পাদদেশে বসব। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে সে দিন আমাদের বসতে দিচ্ছে না পুলিশ। তবে তার পর দিন থেকেই একই জায়গায় আমাদের স্বাধীনতার লড়াই চলবে।”

উচ্চ প্রাথমিকের এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “২০১৫ সালের ১৬ অগস্ট আমরা লিখিত টেট দিয়েছিলাম। সে দিন থেকে শুরু করে এ বারের স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত ২৫৫৬ দিন অতিক্রান্ত হচ্ছে। কেউ টিউশনে, কেউ বা পরিবারের চাষবাস করে দিন গুজরান করছে। কেউ কেউ ভিন রাজ্যে সামান্য বেতনে বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করছে। কেউ আবার দোকান দিয়েছে। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে যাননি বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থী।” উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোযের বক্তব্য, ‘‘গত আট বছরে আমাদের সাত জন চাকরিপ্রার্থী মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন। ওঁরা আর্থিক অনটন ও দুশ্চিন্তার কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা ওই সাত জনকে চাকরির জন্য শহিদ বলি। ১৫ অগস্ট আমরা শিয়ালদহ থেকে কালো ব্যাজ পড়ে পদযাত্রা করছি। পদযাত্রায় ওই সাত জনকে স্মরণ করা হবে।”

উচ্চ প্রাথমিক, নবম থেকে দ্বাদশ, প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী, কর্মশিক্ষা, শারীর শিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের কাছে প্রায়ই খবর আসে বিভিন্ন জেলায় বহু স্কুল শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে। অনেক স্কুল শিক্ষক শূন্য, কোথাও আবার প্রাথমিকের দু-একজন শিক্ষককে দিয়ে স্কুল চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সুশান্তের কথায়, “আমাদের নিয়োগ হলে ওই স্কুলগুলোও অক্সিজেন পাবে। নিয়োগের আশা ছাড়িনি। এ বার হল না। পরের বার ১৫ অগস্ট আমরা হয়তো পড়ুয়াদের সঙ্গেই জাতীয় পতাকা তুলব।”

Protest SSC recruitment scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy