Advertisement
E-Paper

টিকিট না পেয়ে একা লড়ে হার, আত্মঘাতী নির্দল প্রার্থী

এর আগে কংগ্রেসের টিকিটে ২০০৭ ও ২০১২ সালে ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন সুপ্রিয়া। বরাবরই বিধায়ক শঙ্কর সিংহের ঘনিষ্ঠ, সেই সুবাদে কংগ্রেসের দলীয় সমীকরণে দীপা দাশমুন্সির বৃত্তে। কপালে বড় টিপ, অল্প গয়নায় সাজতেনও অনেকটা দীপার মতো করেই।

সুপ্রকাশ মণ্ডল ও সৌমিত্র সিকদার

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫৮
সুপ্রিয়া দে। —ফাইল চিত্র।

সুপ্রিয়া দে। —ফাইল চিত্র।

তাঁর কাছে লড়াইটা ছিল মর্যাদার। ভোট কাটাকুটিতে ৩০ ভোটে হেরে ঘরে খিল দিয়েছিলেন তিনি। মুঠো-মুঠো ঘুমের ওষুধও যে খেয়ে নিয়েছেন, তা টের পেতে বাড়ির লোকের খানিক সময় লেগে গিয়েছিল। ডেকে সাড়া না পেয়ে ছিটকিনি ভেঙে ঢোকেন তাঁর স্বামী। তখন আর সাড় নেই।

প্রথমে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল, পরে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তারেরা জানান, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সুপ্রিয়া দে-র (৪০)। কেন এই অঘটন, তার ব্যাখ্যা রয়ে গিয়েছে সম্ভবত ওই ‘নির্দল’ শব্দেই।

এর আগে কংগ্রেসের টিকিটে ২০০৭ ও ২০১২ সালে ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন সুপ্রিয়া। বরাবরই বিধায়ক শঙ্কর সিংহের ঘনিষ্ঠ, সেই সুবাদে কংগ্রেসের দলীয় সমীকরণে দীপা দাশমুন্সির বৃত্তে। কপালে বড় টিপ, অল্প গয়নায় সাজতেনও অনেকটা দীপার মতো করেই। ২০১২-র পুরভোটের পরেই কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা দল বদলে চলে যান তৃণমূলে। দল বদলান সুপ্রিয়াও। কুপার্স যাঁর খাসতালুক বলে পরিচিত, সেই শঙ্কর সিংহও সম্প্রতি তৃণমূলে আসেন। তার পরেও যে টিকিট মিলবে না, তা সুপ্রিয়া ভাবতেই পারেননি।

আরও পড়ুন: জিতে নিল শাসকই, সবাই সাফ

স্থানীয় সূত্রের খবর, ১ নম্বর ওয়ার্ডে সুপ্রিয়াকেই চেয়েছিলেন শঙ্কর। কিন্তু তাঁর বদলে নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের অনুগামী বলে পরিচিত অশোক সরকারকে প্রার্থী করা হয়। সুপ্রিয়া নির্দল প্রার্থী হন। প্রশান্ত মণ্ডল নামে এক বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীও নির্দল দাঁড়িয়ে যান। কিন্তু লড়াইটা যে মূলত সুপ্রিয়া বনাম তৃণমূল, তা সকলেই জানত। মূলত সুপ্রিয়ার সৌজন্যেই কিছুটা ‘প্রতিরোধ’ হয়েছিল ওই ওয়ার্ডে। ভোটের দিন মেজাজ হারিয়ে তৃণমূলের এক জনকে চড় মারার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার মধ্যেই জানা হয়ে যায়, তৃণমূল পেয়েছে ৩৫০ ভোট, সুপ্রিয়া ৩২০। প্রশান্ত মণ্ডল ১৭৯ ভোট কেটেছেন। ‘ভোট কাটাকাটি না হলে জিততাম’ বলে মনমরা সুপ্রিয়া বাড়ি ফিরে যান, জানাচ্ছেন ঘনিষ্ঠেরা। স্বামী সমীর দে-র অভিযোগ, ‘‘ফল বেরনোর পর তৃণমুল কর্মীরা যে সব টিপ্পনী কাটছিল, সেগুলো সহ্য করতে না পেরেই ও ঘুমের ওষুধ খায়।” দৃশ্যত বিপর্যস্ত শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি, এমন ঘটে যাবে।’’

জয়ী তৃণমূল প্রার্থী অবশ্য দাবি করছেন, কেউ সুপ্রিয়াকে অপমান করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘লড়াইয়ে হার-জিত আছেই। তাই বলে নিজেকে শেষ করে দিতে হবে!’’ মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের বক্তব্য, “ওঁকে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কারও একার নয়। খুব দুঃখজনক পরিণতি।”

Municipal Poll West Bengal Municipal Elections TMC তৃণমূল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy