Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশ ঠুঁটো, শিশু বিক্রির চক্র উধাও

বেআইনি ভাবে শিশু বিক্রির অভিযোগে হোমের লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছিল। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল থানাতেও। কিন্তু পুলিশ কোনও তদন্ত না-করায় জানাই গেল না, শিশু পাচার চক্রের মাথায় কারা।

দীক্ষা ভুঁইয়া
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৩
Share: Save:

বেআইনি ভাবে শিশু বিক্রির অভিযোগে হোমের লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছিল। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল থানাতেও। কিন্তু পুলিশ কোনও তদন্ত না-করায় জানাই গেল না, শিশু পাচার চক্রের মাথায় কারা।

ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার। দু’বছর আগেকার। জেলার স্পেশ্যালাইজড অ্যাডপশন এজেন্সি (সা) এবং হোমের যোগসাজশে শিশু বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু পুলিশ তদন্ত না-করায় পুরো বিষয়টিই ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে বলে রাজ্যের শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের একাংশের অভিযোগ।

ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, হোম-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেআইনি শিশু বিক্রি চক্রে কারা কারা জড়িত ছিল, সেটাই জানা গেল না। শুধু তা-ই নয়, সেই সময় কত শিশু ওই হোমে এসেছিল এবং কত শিশু বেআইনি ভাবে বিক্রি হয়ে গিয়েছে, পাওয়া যায়নি তার পরিসংখ্যানও। ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়ে হোমের লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা পেলাম না,’’ আক্ষেপ, নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের ওই কর্তার।

যদিও পুলিশ জানায়, যে-সময়ে অভিযোগ এসেছিল, তখন ওই হোম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাউকে পাওয়া যায়নি়। বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসিডিডি সন্তোষ পাণ্ডে জানান, এই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।
‘স্পেক’ নামে ওই হোমের কর্তারা পলাতক। তাই তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: মিথ্যে নালিশে শাস্তি, আশ্বাস মমতার

শিশু কল্যাণ দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, দু’বছর আগে পুলিশ তদন্ত শুরু করলে তখনই রাজ্য জুড়ে শিশু বিক্রির চক্র ধরা পড়ে যেত। কেন যে রাজ্যে হোম থেকে শিশু বিক্রি বন্ধ করা যাচ্ছে না, এই একটি ঘটনাতেই সেটা জলবৎ পরিষ্কার।

সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা ও জলপাইগুড়িতে দত্তক নেওয়ার নামে হাসপাতাল, নার্সিংহোম থেকে শিশু বিক্রির অভিযোগের তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ধরা পড়েন দুই
জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক, হোমের আধিকারিক এবং বিজেপি যুব নেত্রী জুহি চৌধুরী। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশও বেশ কিছু শিশুকে বিভিন্ন নার্সিংহোম থেকে উদ্ধার করে।

উত্তর ২৪ পরগনার ওই চক্র কী ভাবে চলত? নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, কারও মা আবার কারও বাবা থাকা সত্ত্বেও বাচ্চাদের হোমে রাখার নাম করে চড়া দামে বিক্রি করে দেওয়া হতো। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেই রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর ওই
হোমের লাইসেন্স বাতিল করে দেয়। পরে বাগুইআটি থানায় জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন অরবিন্দ দাশগুপ্ত একটি অভিযোগও দায়ের করেন। তার কোনও তদন্তই হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Trafficking Racket Inefficiency
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE