পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কোনও রাজ্যের সরকার চাইলেই স্কুল স্তরে পাশ-ফেল প্রথা ফের চালু করা যাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে প্রাথমিক স্তরে লটারির বদলে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার বিধানসভায় এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এ দিন প্রশ্নোত্তর পর্বে কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল মান্নানের একটি প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘লটারির মাধ্যমে ভর্তি নেওয়ার ফলে অনেক স্কুলেরই মান নেমে যাচ্ছে। অনেক নামী স্কুল এই সমস্যায় ভুগছে।’’ তিনি জানান, এই কারণেই মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়া যায় কি না, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
১৯৯৫ সালে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে প্রথমে লটারির ভিত্তিতে ভর্তির ব্যবস্থা চালু হয়। তার পরে ২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনে বলা হয়, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। সেই আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এখন সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিটি স্কুলে লটারির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া হয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্য নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠছে শিক্ষা শিবিরে। মূল প্রশ্ন, শিক্ষার অধিকার আইনে লটারি চালু হয়ে থাকলে তা আবার রদ করা যাবে কী ভাবে? পশ্চিমবঙ্গ সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর বক্তব্য, পথ রয়েছে। কী সেই পথ? সৌগতবাবুর ব্যাখ্যা, নির্দিষ্ট কিছু স্কুলকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে কেন্দ্রের কাছে সেই স্কুলগুলিতে লটারি পদ্ধতি তুলে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির নিয়ম চালু করার আবেদন জানানো যায়। নবোদয় বিদ্যালয়ে এই পদ্ধতিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। কিন্তু সব স্কুলে এই নিয়ম চালু করার ক্ষেত্রে অসুবিধা আছে। সৌগতবাবু জানান, সরকারি স্কুলগুলির পঠনপাঠন তুলনামূলক উচ্চ মানের। কিন্তু লটারি পদ্ধতি চালু হওয়ায় মেধা যাচাইয়ের সুযোগ নেই। দিনে দিনে স্কুলগুলির মান কমছে। তাঁদের তরফে রাজ্য সরকারকে বারবার তা জানানো হয়েছে। বঙ্গীয় স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠনের নেতা স্বপন মণ্ডল মনে করেন, শিক্ষার অধিকার আইন মেনে সব স্কুলে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির নিয়ম চালু করা সম্ভব নয়।
এক দিকে ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়ানোর আগ্রহ বাড়ছে। অন্য দিকে লটারির মাধ্যমে ভর্তির ফলে বাংলা মাধ্যমের নামী স্কুল ভাল পড়ুয়া পাচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী এ দিন জানান, শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামাঞ্চলেও অভিভাবকেরা সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়াতে চাইছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা মাধ্যমের বহু স্কুল পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে। পড়ুয়ারা বাংলার পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় এঁটে ওঠার জন্য ইংরেজি ভাষা শিখতে চাইছে। কোথায় কী দরকার, আমরাও সেটা খতিয়ে দেখছি।’’ শিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকার এর আগে রাজ্য জুড়ে ইংরেজি মাধ্যমের ১০০টি স্কুল চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সংখ্যাটা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্যাঙের ছাতার মতো ইংরেজি স্কুল গজিয়ে উঠছে, কী ভাবে? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা তো এলাকার বিধায়কের দেখার কথা!’’ কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র প্রশ্ন করেন, স্কুল স্তরে পাশ-ফেল ফেরানোর কী হল? পার্থবাবু জানান, পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটি সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy