Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Chungthang Dam

চুংথাং বাঁধ নিয়ে তদন্ত

ঘটনার তিন দিন পরেই দিল্লি থেকে আন্তর্মন্ত্রক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সিকিমে এসেছে। দলটি সিকিমের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছে।

কেন্দ্রীয় স্তরে ফরেন্সিক ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের এনে চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের অবস্থার তদন্ত হবে।

কেন্দ্রীয় স্তরে ফরেন্সিক ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের এনে চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের অবস্থার তদন্ত হবে। ছবি: সংগৃহীত।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:০৫
Share: Save:

উত্তর সিকিমের তিস্তা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুংথাং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ভাঙার ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ে বিশদ তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে সে রাজ্যের মুখ্য সচিব ভিবি পাঠকের নেতৃত্বে বিভিন্ন দফতর, সেনা বাহিনী, বায়ুসেনার অফিসারদের বৈঠকে চুংথাংয়ের বাঁধ ভাঙার ঘটনাটি নিয়ে আলোচনায় ঠিক হয়েছে, সিকিমের পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হলে কেন্দ্রীয় স্তরে ফরেন্সিক ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের এনে চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের অবস্থার তদন্ত হবে।

সাম্প্রতিক হড়পা বানের পরে, চুংথাংয়ের উপরের এলাকার মুনসিথাংয়ে সেনার বিস্ফোরক ডিপো থেকে জলের তোড়ে বিস্ফোরক ভেসে এসে বাঁধে বিস্ফোরণ ঘটায় এবং তাতে কংক্রিটের বাঁধের বড় অংশ তিস্তায় তলিয়ে গিয়েছে বলে অনেকে দাবি করেন। বাঁধের পাশে বিস্ফোরণের ছবিও (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। সিকিমের মুখ্য সচিব ভিবি পাঠক অবশ্য শুক্রবার বলেন, ‘‘বিস্ফোরণের অভিযোগ সরকারি ভাবে কেউ করেনি। তবে তদন্তে কোনও দিক বাকি রাখব না। রাজ্যের পরিস্থিতি একটু ঠিক হলেই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় ফরেনসিক এবং বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা যাবেন। তাঁদের রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা পড়বে।’’

ঘটনার তিন দিন পরেই দিল্লি থেকে আন্তর্মন্ত্রক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সিকিমে এসেছে। দলটি সিকিমের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছে। দলটি দিল্লিতে ফিরে রিপোর্ট দিলে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে সিকিমের জন্য টাকা মঞ্জুর হবে। নতুন করে বাঁধ নির্মাণের জন্য মোটা টাকার প্রয়োজন হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি থেকে তা ঠিক হতে পারে।

এর মধ্যেই চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ‘ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল’ বা জাতীয় পরিবেশ আদালতের ‘তোপের’ মুখে পড়েছে সিকিম সরকার এবং ‘ন্যাশনাল হাইড্রো ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন’ (এনএইচপিসি)। সরকারি সূত্রের খবর, জাতীয় পরিবেশ আদালত বাঁধ ভেঙে জল বেরিয়ে পরিবেশ এবং এলাকার কী ভাবে, কতটা ক্ষতি করেছে তা জানতে চেয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ২০ অক্টোবর দিল্লিতে শুনানির দিন ধার্য করে, এ ব্যাপারে সিকিম সরকার এবং এনএইচপিসি-র রিপোর্ট তলব করেছে পরিবেশ আদালত। পাহাড়ের বড় অংশের বাসিন্দাদের মত, ‘‘স্বাভাবিক নদীপথ ঘোরানো, পাহাড় কেটে বাঁধ তৈরি, পর পর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সিকিমে বিপদ ডেকে এনেছে।’’

কালিম্পঙে এ দিনই রাজ্য প্রশাসন, ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) এনএইচপিসি-সহ বিভিন্ন দফতরের বৈঠক হয়েছে। জিটিএ-প্রধান অনীত থাপা বলেন, ‘‘তিস্তার বিভিন্ন এলাকায় দ্রুত নদী বাঁধ, গার্ডওয়ালের জন্য এনএইচপিসিকে বলা হয়েছে।’’

তিস্তাপার থেকে রকেট লঞ্চারের শেল, মর্টার, ‘বফর্স চার্জার’ উদ্ধারের অবশ্য বিরাম নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০টি শেল এবং চারটি ‘বফর্স চার্জার’ উদ্ধার হয়েছে। একটি শেল নিষ্ক্রিয় করার সময়ে বিস্ফোরণে একটি বাড়ির চাল উড়ে যায়। তবে তাতে কেউ থাকেন না। সিকিম প্রশাসনের দাবি, লাচুং থেকে সমস্ত পর্যটকদের ফেরানো সম্ভব হয়েছে। তবে লাচেনে এখনও কিছু পর্যটক আটকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sikkim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE