সোনার ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যাকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় ধৃত তৃণমূল নেতাকে জেরা করে গোটা ঘটনা এবং সেই ঘটনাস্থলে কারা উপস্থিত ছিল, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় প্রথমে রাজু ঢালি ও তুফান থাপা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ দিকে, জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, বিধাননগর পুলিশের একটি দল উত্তরবঙ্গেও তদন্ত চালাচ্ছে। সেই তদন্তে অসম ও নেপালের কিছু যোগ মিলেছে বলে দাবি। তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আলিপুরদুয়ারেও তদন্তকারী দল বেশ কিছু তথ্য খুঁজছে।
বিধাননগর পুলিশের হাতে কয়েক দিন আগে একটি ভিডিয়ো আসে। সেই ভিডিয়ো থেকেই জানা যায়, তৃণমূলের কোচবিহার-২ ব্লকের সভাপতি সজল সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। গত বুধবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। সজলকে জেরা করে যে তথ্য মিলবে, সেই তথ্যের সঙ্গে রাজু ও তুফানের বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হতে পারে। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। যে সোনা নিয়ে এত কাণ্ড, সে ব্যাপারেও সব রকম খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। এই ঘটনায় অশোক কর নামে এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেছিল, নিউ টাউনের যে বাড়িতে ওই ব্যবসায়ীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে সে-ই সোনা চুরি করেছে। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। জানা গিয়েছে, নিউ টাউনের ওই বাড়িতে ঘটনার আগে ও পরে কারা যাতায়াত করেছে, সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ২৯ অক্টোবর ওই সোনার ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরেই মৃতের পরিবারের তরফে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তাতে নাম জড়ায় জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের। যদিও তিনি এখনও পর্যন্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা চক্রান্তের তত্ত্ব সামনে এনেছেন। অভিযোগ দায়ের হওয়ার ১৪ দিন পরেও তাঁর নাগাল পায়নি পুলিশ, যা নিয়ে তদন্তকারীরা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন।
অন্য দিকে, রাজগঞ্জের বিডিও রাজবংশী বলেই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলল ‘কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি’। প্রশান্ত দোষী বলে প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছে সংগঠন। প্রশান্ত নিজেও একাধিক বার দাবি করেছেন যে, রাজবংশী বলেই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)