‘রেল পক্ষ’, জেনারেল ম্যানেজারের ঘোরাঘুরি, রেল বোর্ড কর্তাদের পিঠ চাপড়ানি— সবই সার। গত এক মাসে শিয়ালদহ ডিভিশনে লোকাল ট্রেন পরিষেবার এতটুকুও উন্নতি হয়নি। সময়মতো ট্রেন চলাচল দূরের কথা। নিত্যদিনই নানান ক্রটিবিচ্যুতিতে যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ট্রেন। গুমোট গরমে নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের।
মঙ্গলবার রাতেও ট্রেন-বিভ্রাটে ঘরমুখী মানুষজনকে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হল। নৈহাটি লোকাল ৯টা ২০ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ছাড়ার পরে ধুঁকতে ধুঁকতে দমদম স্টেশনের কাছে পৌঁছেই গেল থমকে। প্রায় এক ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। কারণ কী, বাড়ি ফিরতে অধীর যাত্রীরা সেই প্রশ্নের জবাব পাননি। দীর্ঘ ক্ষণ পরে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘দমদম স্টেশনের আগের ক্রসিংয়ে একটি পয়েন্ট বিগড়ে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল থমকে যায়।’’
সাড়ে ১০টা নাগাদ ফের ট্রেন চালু হলেও দু’পা এগোতেই না-এগোতেই ফের বিপত্তি। আবার থমকে গেল ট্রেন। চালু হল ১৫ মিনিট পরে। দু’দফায় প্রায় দেড় ঘণ্টার ট্রেন বিপর্যয়ে নাজেহাল হন যাত্রীরা।
কেন এমন ঘটছে বারবার?
রেলকর্তাদেরই একাংশ জানান, শিয়ালদহ ডিভিশনে কর্মসংস্কৃতি চুলোয় গিয়েছে। অফিসার ও কর্মীদের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। ট্রেন চালানোর জন্য যে-সব দফতরের একসঙ্গে কাজ করার কথা, তাদের মধ্যে বোঝাপড়ার চূড়ান্ত অভাব। ফলে যা ঘটার, তা-ই ঘটছে।
এর সুরাহা হচ্ছে না কেন?
রেলেরই খবর, যাত্রীদের এই ধরনের নিত্য দুর্ভোগের কথা উপর মহলে বারে বারেই চেপে যান রেল-কর্তৃপক্ষ। যেমনটি হয়েছে এ বারের পর্যালোচনার সময়েও। শিয়ালদহে যে ঠিকমতো ট্রেন চলছে না, সেই তথ্য এ বারেও দেওয়া হয়নি রেল বোর্ডের কর্তাদের। সারা বছরে কেমন কাজ হল, তা খতিয়ে দেখতে রেল বোর্ডের কর্তারা সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু এই ধরনের বিভ্রাট এবং যাত্রীদের নিত্য সমস্যার কথা তাঁদের কাছে স্পষ্ট করা হয়নি বলেই অভিযোগ। ফলে মুশকিল আসানেরও বালাই নেই। রেলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মানতে রাজি নন। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক মহাপাত্র জানান, রেল বোর্ডের কর্তারা পূর্ব রেলের কাজকর্মে খুবই খুশি।
শুনে যাত্রীরা বলেছেন, ‘‘তা হলে আর কিছুই বলার নেই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy