Advertisement
১০ জুন ২০২৪

এক দিনে ৪ মৃত্যু, দায়ী কি এনআরসি

প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কেউ হারিয়ে ফেলেছিলেন ভোটার কার্ড, কেউ খুঁজে পাচ্ছিলেন না অন্য নথি।

আত্মঘাতী শ্যামল রায়ের পরিজনেরা। ধূপগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

আত্মঘাতী শ্যামল রায়ের পরিজনেরা। ধূপগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:০৮
Share: Save:

মঙ্গলবার রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গিয়েছিলেন ময়নাগুড়ির অন্নদা রায়ের বাড়ি। ৩৯ বছরের অন্নদা সম্প্রতি আত্মঘাতী হন। পরিবারের দাবি, তিনি এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন। অরূপ থাকতে থাকতেই জানা যায়, জলপাইগুড়িরই ধূপগুড়িতে আত্মঘাতী হয়েছেন ভ্যানচালক শ্যামল রায় (৩৯)। এর কিছু ক্ষণের মধ্যে খবর আসে, জলপাইগুড়ি শহরে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে মারা গিয়েছেন সাবের আলি (৩২)। পড়শি জেলার সদর শহর কোচবিহারে অর্জিনা বিবি (২৭) আত্মহত্যা করেছেন এ দিনই। দিনহাটায় সামসুল হক (৪৪) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রতিটি মৃত্যুর সঙ্গেই জড়িয়ে গিয়েছে এনআরসি আতঙ্কের কথা।

প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কেউ হারিয়ে ফেলেছিলেন ভোটার কার্ড, কেউ খুঁজে পাচ্ছিলেন না অন্য নথি। কারও আবার ভোটার কার্ডে এক নাম, রেশন কার্ডে আর এক। কোচবিহারের অর্জিনা বিবির যেমন বিভিন্ন নথিতে বিভিন্ন নাম ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। এই নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে একটু কথা কাটাকাটি হয় বলেও খবর। এ দিন তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, এনআরসি আতঙ্কেই এই আত্মহনন।

ধূপগুড়ির ভ্যানচালক শ্যামল রায় ভোটার কার্ড হারিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন, বলছেন তাঁর স্ত্রী এবং পড়শিরা। তাঁদের দাবি, সেই ভয়েই হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আত্মহত্যা করেন শ্যামল। একই কারণ উঠে এসেছে জলপাইগুড়ির সাবের আলির বাড়ির লোকেদের মুখেও। আবার দিনহাটার সামসুল হকের বাড়ির লোকেদের দাবি, বিভিন্ন নথিপত্র জোগাড়ে গত কয়েক দিন ধরে ছোটাছুটি করছিলেন তিনি। উৎকণ্ঠিতও ছিলেন। সোমবারই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এ দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

স্বাভাবিক ভাবেই এই নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এর জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করে বলেন, ‘‘কেউ দুর্ঘটনায় বা ঋণে মারা গেলেও এনআরসি বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পর কেউ মারা গেলে যদি এনআরসির নামে চালিয়ে দেওয়া হয়, তবে তার দায় মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা উচিত।’’ এর জবাবে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষেরাই তো আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। এই সব মৃত্যুর দায় তাঁদেরই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death NRC Assam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE