E-Paper

বেতন চালুর সিদ্ধান্ত, বেতন ফেরতের নয়

চাকরি বাতিল এবং বেতন ফেরত না নেওয়া-সহ কয়েকটি নির্দেশ পালন না করায় শিক্ষা দফতর এবং এসএসসি-র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৫৫

—ফাইল চিত্র।

চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে কারা আপাতত স্কুলে যেতে পারবেন এবং বেতন পাবেন, সেই তালিকা বুধবার থেকেই স্কুলগুলিতে পৌঁছতে শুরু করেছে বলে খবর। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, ওই তালিকা অনুযায়ী বেতনের হিসাব জেলা স্কুল পরিদর্শকের (ডিআই) অফিসে পাঠানো হবে। যাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই, তাঁদের বেতন বন্ধ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোগ্য এবং ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিতদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বেতন ফেরত নেওয়ার নির্দেশও ছিল। এ দিন স্কুলগুলিতে কারা আপাতত বেতন পাবেন সেই তালিকা দিলেও বেতন ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি বলেই খবর।

উল্লেখ্য, চাকরি বাতিল এবং বেতন ফেরত না নেওয়া-সহ কয়েকটি নির্দেশ পালন না করায় শিক্ষা দফতর এবং এসএসসি-র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা। এ দিন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে শিক্ষা দফতর এবং এসএসসি-র কৌঁসুলিরা বেতন ফেরত নিয়ে তথ্য দেননি। বরং, হাই কোর্ট অবমাননার মামলা শুনতে পারে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরদৌস শামিমের যুক্তি, হাই কোর্টের কয়েকটি নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট অপরিবর্তিত রেখেছে। অবমাননার মামলা শোনার অধিকারও হাই কোর্টের আছে। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানিতে হাই কোর্ট যে এই মামলা শুনতে পারে, এই সওয়ালের সপক্ষে মামলকারীদের আইনজীবীদের সন্তোষজনক যুক্তি পেশ করতে হবে।

এ দিন সরকারপক্ষের কৌঁসুলিদের বক্তব্য ছিল, হাই কোর্টের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে। তাই আদালত অবমাননা কিছুটা হাই কোর্টে এবং কিছুটা সুপ্রিম কোর্টে, এটা হতে পারে না। হাই কোর্ট অবমাননার মামলা শুনতে পারে কি না, সেটা শীর্ষ আদালত স্থির করুক। বিচারপতি বসাক জানতে চান, উত্তরপত্র প্রকাশ, চাকরি বাতিল, বেতন ফেরানোর নির্দেশ কি পালন করা হয়েছে? সরকার পক্ষের কৌঁসুলিরা জানান, এ ব্যাপারে তথ্য তাঁদের কাছে নেই।

এ দিকে, অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত না হওয়া শিক্ষকেরা যে আপাতত স্কুলে ফিরে বেতন পাবেন, তা খাতায়-কলমে নিশ্চিত করেছে সরকার। বাঙুরের নারায়ণ দাস মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন , ‘‘আমাদের স্কুলে দু’জন শিক্ষক চাকরিহারা হয়েছিলেন। ডিআই অফিস থেকে আসা তালিকায় এক জনের নাম আছে। বোঝা যাচ্ছে, যাঁর নাম নেই তিনি অযোগ্য এবং তাঁর বেতন বন্ধ করতে হবে।’’ যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানান, তাঁদের স্কুলে ২০১৬ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একজন শিক্ষক যোগ দিয়েছিলেন। সরকারি তালিকায় তাঁর নাম আছে। তাই তিনিবেতন পাবেন।

ডিআই অফিস থেকে জানানো হয়েছে, কোনও সার্বিক তালিকা যাচ্ছে না। যদি কোনও চাকরিহারা শিক্ষক অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত না হন, তা হলে তাঁর নামই স্কুলে পাঠানো হবে। মঙ্গলবার শিক্ষা দফতর জানায়, ১৭২০৬ জন চাকরিহারা শিক্ষকের মধ্যে ১৫৪০৩ জন ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত হননি বলে এসএসসি জানিয়েছে। সূত্রের খবর, সেই তালিকা থেকেই শিক্ষকদের নাম পাঠানো হচ্ছে, বেতন, কী কী সুবিধা তাঁরা পাবেন, তা-ও চিঠিতে বলা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bengal SSC Recruitment Verdict

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy