E-Paper

সবাইকে নিরামিষাশী করা যাবে না, মন্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের

মামলাটি হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি কালীমন্দিরে পশুবলিকে কেন্দ্র করে। ওই মন্দিরের বাৎসরিক পুজোয় প্রতি বছর বহু পশু বলি হয়। তার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করেন এক ব্যক্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৭
Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পূর্ব ভারতে আমিষ ভক্ষণের রেওয়াজ প্রাচীন। মামলা করে এই এলাকার মানুষকে নিরামিশাষী করা সম্ভব নয় বলেই মনে করে কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার পশুবলি সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে যে যদি পূর্ব ভারতের সকলকে নিরামিষাশী করা মামলাকারীর চূড়ান্ত লক্ষ্য হয় তা হলে তা সম্ভব নয়। এর পরেই এজলাসে উপস্থিত রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে (এজি) উদ্দেশ্য করে ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে যে এজি নিজে এক দিনও মাছ না খেয়ে থাকতে পারেন না। তা শুনে এজি-ও বলেন, ‘‘আমি প্রবল আমিষাশী।’’

মামলাটি হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি কালীমন্দিরে পশুবলিকে কেন্দ্র করে। ওই মন্দিরের বাৎসরিক পুজোয় প্রতি বছর বহু পশু বলি হয়। তার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করেন এক ব্যক্তি। তাঁর বক্তব্য, ওই মন্দিরে প্রতি বছর কয়েক হাজার পশু বলি হয়। সংবিধান অনুযায়ী, পশুবলি ধর্মীয় রীতি পালনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয়। শুধু ওই একটি মন্দিরের পশুবলি নিয়েই যে মামলা তা-ও জানান তিনি। এত পশুবলি থেকে দূষণ হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী কী ভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন যে বলিপ্রথা ধর্মীয় আচারের অঙ্গ নয়? উত্তর ভারত এবং পূর্ব ভারতের ধর্মীয় আচারের যে ফারাক আছে, তাও মনে করিয়ে দেয় কোর্ট। মহাকাব্য বা পৌরাণিক চরিত্রদের আমিষ ভক্ষণ নিয়ে যে বিতর্ক আছে, সেই প্রসঙ্গও উঠেছে কোর্টে। রাজ্যের এজি জানান, এই মামলা আদৌ জনস্বার্থ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উল্লেখ করে তিনি জানান যে আদালত পশুবলি বন্ধে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। পশুক্লেশ নিবারণী আইনের একটি ধারাতেও যে পশুবলির স্বীকৃতি আছে তাও জানান এজি। শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ জানায় যে এই সংক্রান্ত একটি মামলা আগে থেকেই হাই কোর্টে বিচারাধীন। এই মামলাটি আগের মামলার সঙ্গে যুক্ত হবে।

কেন্দ্রীয় পশু কল্যাণ বোর্ডের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাম্মানিক প্রতিনিধি ব্রতীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত বছরও বিধি ভেঙে বলি দেওয়া হয়েছিল। আমরা সে কথা আদালতকে জানিয়েছি। আশা করছি, আদালত এ বছর ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের ওই কালীপুজো কমিটির এ বছরের ম্যানেজার মানস চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা সব ব্যবস্থাই রাখছি। তবে বলির বিষয়টি ভক্তদের উপরে নির্ভর করে।’’ কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, মন্দির চত্বরে বলি না দিয়ে পাঁঠা উৎসর্গ করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও সারা বছর চালু রাখা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy