রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ফাইল চিত্র।
সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে ‘সম্পর্কের অন্ধকার’ দূর করতে হবে সরকারকেই—এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
শুক্রবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট ‘প্রোটোকল’ না মানায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
অভিযোগের জবাবে এদিন রাজ্যপালকেও পাল্টা আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মুখ খুলেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘এই অন্ধকার তৈরি করেছেন রাজ্যপাল নিজেই। তাই তা দূর করার দায়ও তো তাঁরই।’’ বিমানবাবুর বক্তব্য, কোনও প্রথাই ভাঙা হয়নি।
গত কয়েকমাসে তাঁর বিরুদ্ধে বারবারই সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ করেছে শাসক শিবির। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই ‘সাংবিধানিক সীমা’র প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘আমি সংবিধান মেনেই কাজ করছি। সরকার চালানো আমার কাজ নয়। তবে সরকার যে সংবিধান মতো চলছে, তা নিশ্চিত করা আমার কাজ।’’ তারপরেই ধনখড় বলেছেন, ‘‘যদি কোথাও সংবিধান লঙ্ঘিত হয়, আমাকে হস্তক্ষেপ করতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রী সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার শপথ নিয়েছেন। আমি সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছি।’’ মন্ত্রী চন্দ্রিমা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী ও সরকার ওয়াকিবহাল।’’
ওই সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যের অভিযোগে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দিকেই আঙুল তুলেছেন রাজ্যপাল। ধনখড় বলেছেন, এই আচরণ তাঁর ( মুখ্যমন্ত্রী) উচ্চতাকেই খাটো করবে। রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা পাল্টা বলেন, ‘‘মানুষ দেখছেন, নির্বাচিত সরকার ও তার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি রাজ্যপাল কী মনোভাব নিয়ে চলছেন।’’
‘সংবিধান দিবস’ উপলক্ষ্যে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। বিধানসভায় তাঁর প্রতি মুখ্যমন্ত্রী ‘আচরণে’র প্রসঙ্গ তুলেছেন রাজ্যপাল। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্য বিধানসভায় সংশ্লিষ্ট রাজ্যপাল বক্তাতালিকায় পঞ্চম স্থানে। প্রাক্তন রাজ্যপাল, লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার, প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পরে। দেশের কোথাও এরকম দেখা যাবে না। প্রথা ভাঙা হয়েছে।’’
বিধানসভার অনুষ্ঠান নিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য মানতে নারাজ স্পিকার। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন। একইভাবে তিনি নির্দিষ্ট সময়েই বক্তব্য রেখেছেন। তাঁকে বসিয়ে রেখে অন্য কেউ বক্তৃতা করেননি।’’
এদিকে এদিনই রাজ্যসভায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সরব হয় তৃণমূল। ধনখড়ের নাম না করেই ডেরেক ও ব্রায়েনের কটাক্ষ, একনজ রাজ্যপাল সকালে উঠেই দুটি টুইট করেন। তারপর প্রাতঃভ্রমণের আগে সরকারের বিরুদ্ধে দুটি বার্তা দেন। মধ্যাহ্ন ভোডনের পরে গোটা রাজ্যে ঘোরেন। আবার নৈশভোজের আগে রাজ্যের সমস্যা তৈরি করার মতো কিছু কাজ করেন। এর আগে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ১৯৩ ধারায় আলোচনার নোটিস দিয়েছেন তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy