শুভেন্দু রায়
সকাল থেকে মোবাইল বেজে যাচ্ছিল শুভেন্দু রায়ের। স্বামী ফোন ধরছেন না দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন শুভেন্দুবাবুর অসুস্থ স্ত্রী অঞ্জনাদেবী। এক সময় অপর প্রান্ত থেকে যে কণ্ঠস্বর ভেসে আসে তা শুভেন্দুর নয়। এক ব্যক্তি জানান, বিএসএফ জওয়ান শুভেন্দুবাবু হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু তিনি কোথায়, কেমন আছেন, জানতে চাইতেই ফোন কেটে যায়। কিছুক্ষণ বাদে অঞ্জনাদেবীর ভাই সত্যেনবাবু ফের ফোন করে জানতে পারেন, জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে শুভেন্দুবাবুর (৩৭)।
দু’মাস বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে রবিবারই কাজে যোগ দিতে কাশ্মীরের শোনিতপুর যান ধূপগুড়ির ডাউকিমারির শুভেন্দুবাবু। বুধবার জম্মু-শ্রীনগর সড়কে উধমপুরে তাঁদের কনভয়ের উপর জঙ্গি হামলা হয়। সূত্রের খবর, তখনই মারা যান শুভেন্দু। সত্যেনবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে এক জন বলেছিলেন, জামাইবাবু হাসপাতালে। দিদি হিন্দি বুঝতে পারছিল না। তখন আমি ফোন করলে তাঁর এক সহকর্মীই জানান যে, জামাইবাবু মারা গিয়েছেন। দিদি অসুস্থ বলে তাঁকে এখনও কিছু জানাইনি।’’ শুভেন্দুবাবুর দুই মেয়ে তানিশা ও সৃষ্টি এখনও জানে না তাদের বাবা আর নেই। তানিশা পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। সৃষ্টি সবে স্কুলে ভর্তি হয়েছে।
শুভেন্দুবাবু ১৬ বছর আগে বিএসএফ-এ যোগ দেন। তাঁরা তিন ভাই। তিনি মেজ। ছোট ভাই সিআরপিএফে চাকরি করেন। মেয়েদের পড়াশোনার জন্য শুভেন্দুবাবু স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে ধূপগুড়িতে ভাড়া থাকেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে ধূপগুড়িতে শুভেন্দুবাবুদের বাড়িতে আসেন আত্মীয়রা। অসুস্থ দিদি ও ভাগ্নীদের গ্রামে নিয়ে এসেছেন সত্যেনবাবু। খবর সেখানেও ছড়িয়েছে। তাই পাশের একটি বাড়িতে রেখেছেন দিদিকে। সত্যেনবাবু বলেন, ‘‘সারা রাস্তা দিদির মুখের দিকে তাকাতে পারিনি। ও হয়তো কিছু আঁচও করেছে। তাই একেবারে চুপচাপ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সব কথা তো ওকে বলতেই হবে। কী করে বলব, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy