অসহায়: জেট এয়ারওয়েজের কর্মীদের মৌনী মিছিল। বুধবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র
স্বামী-স্ত্রী দু’জনে বিকল্প রোজগারের রাস্তা খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
কলকাতায় দু’জনেই জেট উড়ান সংস্থার কর্মী। কিন্তু দু’মাস ধরে বেতন বন্ধ। ফেব্রুয়ারির বেতন মার্চের গোড়ায় আর মার্চের বেতন এপ্রিলের গোড়ায় পাওয়ার কথা ছিল, পাননি।সন্তান আছে। তার পড়াশোনার খরচ রয়েছে। ফ্ল্যাটের কিস্তি রয়েছে। মাথার উপরে বাবা-মা রয়েছেন। এই অবস্থায় খাবারের দোকান দিয়ে কিছু টাকা রোজগার করা যায় কি না, তাই ভাবছেন। দিন কয়েক আগে কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরেই এমন খাবারের দোকান করার খোঁজ করতে গিয়ে জেনেছেন, কর্তৃপক্ষকে বিস্তর টাকা দিয়ে সেই দোকান করতে হবে। তাই আপাতত পিছিয়ে আসতে হয়েছে তাঁদের। বুধবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরের টার্মিনালের সামনে জেটের পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার, বিমানসেবক-সেবিকা ও সাধারণ কর্মী-অফিসারেরা জমায়েত করে মৌনী মিছিল করেন। সেখানেই শোনা গেল এই দম্পতির কথা। সেই মিছিলের অগ্রভাগ থেকে জেট-এর অফিসার সুদেষ্ণা গুহ বলেন, ‘‘কখনও ভাবিনি, এমন দিন আসবে। সকলকে অনুরোধ করছি সাহায্য করার জন্য। যাতে আমরা আবার উড়তে পারি।’’
ঠিক এক সপ্তাহ আগে, ১৭ এপ্রিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে জেট। কর্মীদের অভিযোগ, ঠিকমতো পরিচালনার অভাবেই তাঁরা এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছেন। সেই অভিযোগের তির জেট-এর প্রাক্তন মালিক নরেশ গোয়াল ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্তাদের দিকে। আশঙ্কা, তাড়াতাড়ি আবার পরিষেবা চালু না হলে কিংফিশারের কর্মীদের মতো হাল হবে তাঁদেরও। জেট-এর বিমানচালক ক্যাপ্টেন সর্বেশ গুপ্তের কথায়, ‘‘যত দিন বসে থাকবে, তত খরচ বাড়বে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিনিয়োগ প্রয়োজন। এখন সংস্থার হাতে যা সম্পত্তি, বিমান, পরিকাঠামো এবং অভিজ্ঞ কর্মীরা রয়েছেন, তাতে আকাশে উড়তে অসুবিধা হবে না। উড়ান চালু করলে এবং সঠিক পরিকল্পনা থাকলে আবার আমরা মুনাফা করতে পারব।’’
দাবি উঠেছে, এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেটের সমস্যার সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাবে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে, জেট-এর ক্ষেত্রেও তেমন করা হোক। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ১৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও কেন পিছিয়ে এল, সেই প্রশ্নও উঠেছে এ দিন। সেখানে ‘প্লিজ হিয়ার আওয়ার ক্রাই’, ‘সেভ আস ফ্রম ডাইং’-সহ বিভিন্ন বার্তা দেওয়া প্ল্যাকার্ড ছিল। আপাতত, নিজেদের ডিউটির সময় মেনে পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার থেকে সাধারণ কর্মী, সকলে বিমানবন্দরে আসছেন। তাঁদের আশা, মে মাসের গোড়ায় কোনও না কোনও সুখবর আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy