E-Paper

ব্রাত্যের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ, আর্জি নিয়ে বিরোধী-দরবারেও

আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্যেই বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলির সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৫ ০৮:৩৪
ধর্ণায় চাকরিহারা শিক্ষকেরা।

ধর্ণায় চাকরিহারা শিক্ষকেরা। —ফাইল চিত্র।

চাকরি ফেরতের দাবিতে সরকারের উপরে আরও চাপ বাড়াতে শুরু করলেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। বিকাশ ভবনে লাগাতার ধর্নার পরে চাকরিহারাদের একাংশ বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কালিন্দীর বাড়ির সামনেও অবস্থান-বিক্ষোভে বসলেন। তাঁদের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন বিরোধী দলের সঙ্গেও দেখা করেছেন। পাশাপাশি, বিকাশ ভবনের সামনে অশান্তির ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের ডাকে এ দিন ফের বিধাননগর উত্তর থানায় হাজিরা দিয়েছেন চাকরিহারা দুই শিক্ষক।

পুলিশের ডাকে বুধবার ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চে’র চার জনের পরে, এ দিন ‘যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীবৃন্দ’ সংগঠনের ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল এবং সুদীপ কোনার থানায় হাজিরা দিয়েছেন। ইন্দ্রজিৎদের সংগঠনের তরফে সুমন বিশ্বাসের অভিযোগ, “পুলিশ ভয় দেখালেও আমরা ভয় পাচ্ছি না। দরকারে আমরা এই মাসেই নবান্ন অভিযান করব।” স্কুলে ফিরতে পারেননি, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) তালিকায় থাকা এমন চাকরিহারাদের একাংশের সংগঠন ‘ইউনাইটেড টিচিং অ্যান্ড নন-টিচিং ফোরাম’ শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বিপ্লব বিবার নামে এক বিক্ষোভকারীর বক্তব্য, “কিসের ভিত্তিতে স্কুলে যেতে পারছি না, অযোগ্য বলা হচ্ছে? সদুত্তর দিতে পারেনি এসএসসি।” শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলেও অভিযোগ তাঁদের। অধিকার মঞ্চও এ দিন দাবি করেছে, ব্রাত্যের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে তিন দিন আগে চিঠি দেওয়া হলেও এখনও জবাব আসেনি।

আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্যেই বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলির সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ যাওয়ার আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই প্রসঙ্গে এ দিন বলেছেন, “বিষয়টার সমাধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। যোগ্য-অযোগ্য তালিকা দিয়ে রিভিউ (পিটিশন) করলে একমাত্র কিছু হতে পারে। সাধারণ রিভিউ পিটিশন করলে কিছু হওয়ার নেই।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘ওবিসি-মামলার জন্য কলেজে ভর্তি বন্ধ। এটা, ডিএ নির্দেশ, ২৬ হাজারের চাকরি বাতিল আর প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় আসছে — এই চারটিতেই পিসি যাবেন!’’

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে দেখা করেও পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন চাকরিহারাদের একাংশ। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “সবার জন্যই ‘হোমটাস্ক’ নির্দিষ্ট থাকুক। উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) সামনে আনতে হবে। অযোগ্যদের তালিকা দিয়ে টাকা আদায়ের দিনক্ষণ জানানো, নিয়োগ-দুর্নীতি স্বীকার করে যোগ্যদের ছাড়, আর তাঁদের মধ্যে পরে কেউ অযোগ্য প্রমাণিত হলে তার দায় সরকারের— এই মর্মে সরকার রিভিউ পিটিশন করলে তবেই কিছু হতে পারে।” চাকরিহারা সুমন, ইন্দ্রজিতেরা বিধান ভবনে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের সঙ্গেও দেখা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ স্তরে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী যাতে তৎপর হন এবং কংগ্রেস-সহ সম-মনোভাবের সাংসদেরা যাতে সরব হন, তার জন্য শুভঙ্করের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সুমনেরা। শুভঙ্করের বক্তব্য, “কংগ্রেস বরাবরই চাকরিহারাদের পাশে আছে। আগামী দিনেও থাকবে।”

তবে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী শুধু সর্বোচ্চ আদালতেই যাননি, অন্তর্বর্তী কিছু পদক্ষেপও করেছেন। এই অবস্থায় বিকাশ ভবন ও শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি অবাঞ্ছিত, অর্থহীন।”

বিকাশ ভবনে আন্দোলনকারীদের উপরে পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগে এ দিন সংগঠনের সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁয়ের নেতৃত্বে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট অভিযান করেছে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চা। কমিশনারেটের দফতরে ঢোকার মুখে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আন্দোলনকারীদের আটকালে বচসা ও ধস্তাধস্তি বাধে। পরে নেতৃত্ব দফতরে ঢুকে দাবিপত্র জমা দিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC Bratya Basu

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy