Advertisement
E-Paper

‘ছবি মুছব না, বলতেই রাস্তায় ফেলে ঘুষি-লাথি’

বিক্ষোভের ছবি তুলতে যারা ডাকল, তারাই রাস্তায় ফেলে বেধড়ক লাথি-ঘুষি মেরে গেল!

দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৩
কপাল ফুলে গিয়েছে।

কপাল ফুলে গিয়েছে।

এখনও ঘোর কাটছে না!

বিক্ষোভের ছবি তুলতে যারা ডাকল, তারাই রাস্তায় ফেলে বেধড়ক লাথি-ঘুষি মেরে গেল!

সাংবাদিকতার সূত্রে দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিঙ্গুর, হরিপাল ও সংলগ্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছি। সিঙ্গুরে জমি-আন্দোলনের উত্তাল সময়েও কাজ করতে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু শনিবার দুপুরে সিঙ্গুর থানার সামনে বিক্ষোভের ছবি তুলতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হাতেই যে আক্রান্ত হব, ভাবিনি। ওদের অনেকের কপালেই গেরুয়া টিপ। গলায় গেরুয়া উড়নি। মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি।

বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অচেনা নম্বর থেকে ফোন পেয়েছিলাম। হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নাম করে ফোনের ও প্রান্ত থেকে বলা হল— বড়া এলাকায় চোলাইয়ের রমরমার প্রতিবাদে সিঙ্গুর থানার সামনে দুপুরে বিক্ষোভ হবে। সাড়ে ১২টায় থানার সামনে পৌঁছে দেখি শ’দুয়েক মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে বিক্ষোভের কারণ চোলাই নয়, স্থানীয় সমস্যা।

যাই হোক, দু’টো ছবি তুললাম। তৃতীয় ছবি তুলতে যেতেই কালো গেঞ্জি পরা এক যুবকের প্রশ্ন, ‘‘কিসের ছবি তুলছিস?’’ বললাম, বিক্ষোভের। পরিচয়ও দিলাম। সে তখন আর এক যুবককে নির্দেশ দিল, ‘‘এ যা বলছে, তার পুরোটা ভিডিও করে রাখ।’’ তার পরে শাসানি, ‘‘তোরা তো অন্যদের হয়ে দালালি করিস। আমাদের কথা লিখিস না। মুখে যা বললি, কাল না বের হলে তোকে বুঝে নেব।’’

তত ক্ষণে ২০-২৫ জন আমাকে ঘিরে ফেলেছে। হুকুম হল, ‘‘এখন যা ছবি তুলেছিস, সব ডিলিট কর।’’ তা-ই করলাম। আবার হুকুম, ‘‘সব ছবি মোছ।’’ এই হুকুম মানা সম্ভব ছিল না। অফিসের অনেক ছবি ক্যামেরায় রয়েছে। আপত্তি জানাতেই শুরু হয়ে গেল মার। ওরা আমাকে মাটিতে ফেলে দিল। একজন ক্যামেরা কেড়ে নিল। তার মধ্যেই দেখি সঞ্জয় পাণ্ডে নামে এক পরিচিত বিজেপি কর্মী মারমুখী যুবকদের ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁর কথায় কেউ কান দিল না। শেষমেশ অবশ্য আমাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার এগিয়ে আসেন। তাঁরা হামলাকারীদের হটিয়ে দেন। আমাকে থানায় নিয়ে যান। তখনও দূর থেকে শাসাচ্ছিল ওই যুবকেরা। মারের চোটে আমার সারা শরীরে ব্যথা। কপাল ফুলে যায়। পুলিশ আমাকে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। থানায় ফিরে এফআইআর করেছি।

সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এটাই সান্ত্বনা।

Journalist Dipankar Dey সাংবাদিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy