Advertisement
১৭ মে ২০২৪

মমতাকে বিভাজন-খোঁচা নড্ডার, পাল্টা তোপ পার্থের

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র সমর্থনে সোমবার এই মিছিল হয়।

চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে বিজেপির মিছিল। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে বিজেপির মিছিল। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৮
Share: Save:

বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার কলকাতায় মিছিল করে বিজেপির সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা পাল্টা বললেন, ‘‘মমতাদিদি, আপনি সমাজকে ভাগ করছেন।’’ তৃণমূল অবশ্য নড্ডার অভিযোগকে আমলই দিচ্ছে না। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি নেতৃত্ব বাংলার মাটি চেনেনই না!’’

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র সমর্থনে সোমবার এই মিছিল হয়। সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে গত এক সপ্তাহ ধরে বহু মিছিলের সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। মমতা পথে নেমেছেন টানা পাঁচ দিন। আজ, মঙ্গলবারও তিনি মিছিল করবেন। মিছিল হয়েছে বামপন্থী দল, ছাত্র-যুব সংগঠন এবং নাগরিকদেরও। কিন্তু সিএএ-র পক্ষে কলকাতায় প্রথম বড় মিছিল হল এ দিন। মিছিল শুরু হয় মধ্য কলকাতার হিন্দ সিনেমার সামনে থেকে। গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ হয়ে তা পৌঁছয় শ্যামবাজারে।

সিএএ, এনআরসি প্রসঙ্গ থেকে বেরিয়ে নড্ডা এ দিন রাজ্যের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ থেকে ডেঙ্গি, বিভিন্ন বিষয়েও খোঁচা দিয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে তোষণের রাজনীতি করছেন মমতা। তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের বড়মা বীণাপাণি দেবীর আশীর্বাদ নিয়েছিলেন। অথচ, এখন তিনি মতুয়াদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিরুদ্ধাচরণ করছেন।’’

পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বলয়ে বিজেপির এ দিনের মিছিলে ছিলেন রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রমুখ। জমায়েত দেখে নড্ডা বলেন, ‘‘দেখলাম, বাংলা বদলের সঙ্কেত দিচ্ছে। মিছিল করে সভায় পৌঁছতে তিন ঘণ্টা সময় লাগল। পথে দেখলাম, অজস্র বাড়ির জানলা, বারান্দা, ছাদ থেকে মানুষ এই মিছিলকে স্বাগত জানাচ্ছেন। বাংলা রাষ্ট্রভক্তদের রাজ্য। এ রাজ্য সিএএ-কে সমর্থন করছে।’’ সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে এ রাজ্যে যে অশান্তি হয়েছে, ট্রেনে-বাসে-স্টেশনে আগুন জ্বলেছে, তার নিন্দা করে নড্ডা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এই তাণ্ডবের নিন্দা করেনি কেন? মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছেন, অশান্তি না করার জন্য। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাজ কি আবেদন করা? নাকি ব্যবস্থা নেওয়া?’’ এ দিনের সভা থেকে জনতার উদ্দেশে নড্ডার আর্জি, ‘‘লোকসভায় আপনারা ১৮টা আসন জিতিয়ে সিনেমার ট্রেলার দেখিয়েছেন। আগামী দিনে পুরো সিনেমাটাই দেখাবেন। আমাদের নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য নয়, বাংলার অগ্রগতির স্বার্থে।’’

তৃণমূল নেতা পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘নড্ডা জিপে করে ঘুরছেন। মাটিতে পা থাকলে বুঝতেন, মমতার সংগ্রামের বিকল্প নেই। মমতাই পারেন মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে এবং বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করতে। মমতার জনপ্রিয়তা কমানোর সাধ্য কারও নেই।’’ মতুয়াদের প্রসঙ্গে নড্ডার বক্তব্য খারিজ করে পার্থবাবু আরও বলেন, ‘‘বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে মমতার সম্পর্ক ছিল গভীর। মতুয়াদের উন্নয়নের জন্য বোর্ড গঠন করেছেন মমতাই। নড্ডার থেকে তাঁকে মতুয়াদের স্বার্থরক্ষা শিখতে হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE