Advertisement
১১ মে ২০২৪
Justice Abhijit Gangopadhyay

কার নির্দেশে অবৈধদের শূন্যপদে নিয়োগের আবেদন? সিবিআই-নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

অবৈধ নিয়োগের অভিযোগের ভিত্তিতে যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের কথা ভেবে কমিশনের পক্ষ থেকে গত সেপ্টেম্বরে পুনর্বহালের আবেদন করা হয়েছিল উচ্চ আদালতে।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩১
Share: Save:

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নামেই ‘অবৈধ’দের শূন্যপদে নিয়োগের আবেদন জমা পড়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। ওই আবেদনের ভিত্তিতে আদালতে শুনানিও হয়েছে। কিন্তু কার নির্দেশে ওই আবেদন করা হয়, এ সংক্রান্ত কোনও নথি কমিশনের কাছে নেই! কে বা কারা করলেন ওই ‘বেনামী আবেদন’? বুধবার এই প্রশ্ন তুলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

অবৈধ নিয়োগের অভিযোগের ভিত্তিতে যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের কথা ভেবে কমিশনের পক্ষ থেকে গত সেপ্টেম্বরে পুনর্বহালের আবেদন করা হয়েছিল উচ্চ আদালতে। যার প্রেক্ষিতে কমিশনের কড়া সমালোচনা করেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের জন্য অন্য কাজের ব্যবস্থা করা হোক। তবে শিক্ষকতার কাজ নয়। কারণ, তা হলে যোগ্যরাই চাকরি পাবেন না। এর পরেই আবেদন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তারা জানায়, ত্রুটি বুঝতে পেরেই ওই আবেদন প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে খবর, এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কমিশনের আইনজীবীদের কাছে জানতে চান, কার নির্দেশে ওই আবেদন করা হয়েছে। বিচারপতি বলেন, ‘‘কমিশনকে সামনে রেখে কার নির্দেশে শূন্যপদে অবৈধদের নিয়োগের আবেদন করা হল? তার প্রেক্ষিতে নির্দেশের কোনও নথি আদালতে জমা করতে পারেননি কমিশনের আইনজীবী। এর পরেই বিচারপতির নির্দেশ, কার নির্দেশে বেনামী আবদেন করা হল, কার মস্তিষ্কপ্রসূত, তা তদন্ত করে দেখবে সিবিআই। বুধবার থেকেই শুরু করা হোক তদন্ত। তার রিপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যেই আদালতে জমা করতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এটা একটা সংগঠিত অপরাধ। যোগ্যপ্রার্থীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন আর অযোগ্যরা নিয়োগ পাচ্ছেন।’’

বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করতেই কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, এ সবের দায়ভার তিনি নিতে রাজি আছেন। এর পরেই বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি মনে করেন, আবেদনগুলি কমিশনের নামে করা হলেও কমিশন এর সঙ্গে যুক্ত নয়। কমিশনকে সামনে রেখে পিছন থেকে কেউ ‘বেনামী আবেদন’ করেছেন। কমিশনের চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘না, অন্যের দায় আপনি কেন নেবেন? আমি সেটা হতে দেব না। আপনাকে লক্ষ্য করে কেন সব গুলি ছোড়া হবে?’’ এর পরেই বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিবকে হাজির নির্দেশ দেন বিচারপতি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘আবেদনের বয়ানে যা রয়েছে, শিক্ষামন্ত্রীর গলায়ও একই সুর শোনা গিয়েছে। অতিরিক্ত পদ তৈরি করার ক্ষমতাই রাজ্যের নেই। শিক্ষামন্ত্রী যদি আদালতে আসতে চান, তাঁকে স্বাগত। কোনও দালাল আসতে চাইলে, তাঁকেও স্বাগত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Justice Abhijit Gangopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE