ছ’ মাসের মাথায় এক শিক্ষককে চাকরি ফিরিয়ে দিল হাই কোর্ট। — ফাইল ছবি।
টাকা না দিলে এ রাজ্যে চাকরি মেলে না! শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আবারও সরব হয়ে এমন মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এক ব্যক্তিকে শিক্ষক পদ থেকে বরখাস্ত করার প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানি শেষে মঙ্গলবার তিনি ওই মন্তব্য করেন। শুধু তাই নয়, ছ’মাসের মাথায় ওই ব্যক্তিকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদের একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের চাকরি পান মিরাজ শেখ নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু মাস চারেক চাকরি করার পর তাঁকে বরখাস্ত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদের যুক্তি ছিল, স্নাতক স্তরে ওই শিক্ষকের কম নম্বর ছিল। সার্ভিস বুক তৈরি করার সময় বিষয়টি নজরে পড়ে। সে কারণেই মিরাজকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন মিরাজ। আদালতের কাছে করা আবেদনে তিনি জানান, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন’-এর নিয়ম অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সংরক্ষিত পদে চাকরি পেতে হলে স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় প্রার্থীকে ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। জেনারেল প্রার্থীর থাকতে হবে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর। মিরাজ স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৪৬ শতাংশ। মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল সংরক্ষিত পদেই আবেদন করেছিলেন। ওই পদে চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা তাঁর রয়েছে। অনৈতিক ভাবেই তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে আদালতে জানান মিরাজের আইনজীবী।
মঙ্গলবার সেই মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, মিরাজকে ফের শিক্ষক পদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, ওই নির্দেশনামা ঘোষণার সময় রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সরকারকে একপ্রস্ত কটাক্ষও করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ এমন এক রাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে টাকা না দিলে চাকরি মেলে না।’’ পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মানিক ভট্টাচার্যকে টাকা দেয়নি তাই হয়তো মামলাকারীর চাকরি বাতিল হয়েছে।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মিরাজের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘নম্বর কম রয়েছে, চাকরি দেওয়ার সময় কেন নজরে পড়েনি? সার্ভিস বুক তৈরির সময় নজরে পড়ল? এটাও হতে পারে?’’ বিচারপতির নির্দেশ, দ্রুত ওই শিক্ষককে পুনরায় নিয়োগ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy