Advertisement
E-Paper

তৃণমূল সাংসদ কে ডি সিংহের নির্দেশেই স্টিং অপারেশন, বিস্ফোরক ম্যাথু

রাজ্যসভার সদস্য কে ডি সিংহের নির্দেশেই তহেলকা-র হয়ে কলকাতায় এসে ‘স্টিং–অপারেশন’ চালিয়েছিলেন বলে জানালেন ম্যাথু স্যামুয়েল। তৃণমূলের এক ডজনের বেশি নেতা-মন্ত্রীকে সরাসরি টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল লুকোনো ক্যামেরায় তোলা তাঁর ভিডিও ফুটেজে, পরীক্ষার পরে যা আসল বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০৫:০৬
 কে ডি সিংহ। ছবি সংগৃহীত।

কে ডি সিংহ। ছবি সংগৃহীত।

রাজ্যসভার সদস্য কে ডি সিংহের নির্দেশেই তহেলকা-র হয়ে কলকাতায় এসে ‘স্টিং–অপারেশন’ চালিয়েছিলেন বলে জানালেন ম্যাথু স্যামুয়েল। তৃণমূলের এক ডজনের বেশি নেতা-মন্ত্রীকে সরাসরি টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল লুকোনো ক্যামেরায় তোলা তাঁর ভিডিও ফুটেজে, পরীক্ষার পরে যা আসল বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

রবিবার ম্যাথু আনন্দবাজারকে ফোনে জানিয়েছেন, কে ডি সিংহের নির্দেশেই তিনি এই কাজ করেছিলেন। তাঁরই দেওয়া টাকায় কলকাতায় এসে তিনি ওই ভিডিও তুলে নিয়ে যান। সিবিআইকেও এ দিন একই কথা ই-মেল করে জানিয়েছেন ম্যাথু।

কে ডি সিংহ তৃণমূলেরই রাজ্যসভার সাংসদ। ফলে, ম্যাথুর এমন বিস্ফোরক দাবি শুনে বিস্মিত অনেকে। প্রশ্ন উঠেছে, নিজের দলের নেতা-মন্ত্রীদের ফাঁাসানোর উদ্যোগ কেন নিলেন কে ডি? ম্যাথুর দাবি— কে ডি যে তৃণমূলে রয়েছেন, সেই সময়ে তিনি তা জানতেন না।

যদিও কে ডি-র দাবি, তিনি ওই অভিযান সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যাথু তহেলকার প্রাক্তন কর্মী। আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি তহেলকা ছেড়ে চলে যান।’’


ম্যাথু স্যামুয়েল

অথচ ম্যাথু এ দিন জানিয়েছেন, কে ডি-ই তাঁকে ৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন ওই স্টিং অপারেশনের জন্য। তবে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা থেকে ওই ছবি তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে কে ডি তা সম্প্রচার করতে বারণ করেন। ২০১৫ সালের শেষে ওই ভিডিও ফুটেজ নিয়ে তহেলকা ছাড়েন ম্যাথু। নিজের কোম্পানি নারদ নিউজ তৈরি করেন। পরের বছর মার্চ মাসে ওই স্টিং অপারেশন প্রকাশ করেন ম্যাথু। আর কোনও নেতা কি তাঁর থেকে টাকা নিয়েছিলেন? এই প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু বলেন, ‘‘আমি সবার শেষে মুকুল রায়ের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে বিশ্বাস করেননি, আমার হাত থেকে টাকাও নেননি।’’

আরও পড়ুন: সিএমআরআই নিয়ে শুরু তদন্ত

ম্যাথু এখন অসুস্থ, কোচিতে রয়েছেন। এ দিন তাঁকে ই-মেল করে ১২টি প্রশ্নের জবাব চেয়ে পাঠিয়েছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।

সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, কী করে খুঁজে পেলেন ওই নেতা-মন্ত্রীদের?

ম্যাথু জানিয়েছেন, কলকাতায় ইসলাম নামে এক ট্যাক্সিচালকের মাধ্যমে টাইগার মির্জা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় ম্যাথুর। ওই টাইগারই ম্যাথুর সঙ্গে কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদের পরিচয় করিয়ে দেন। ইকবাল একে একে অন্য তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রীদের কাছে তাঁকে নিয়ে যান বলে সিবিআই-কে জানিয়েছেন ম্যাথু।

২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে ম্যাথু বেশ কয়েক বার কলকাতায় এসে তিনটি হোটেলে উঠেছিলেন। হোটেলে থাকা, মাস খানেক ধরে শহরে ঘুরে বেড়ানোর যাবতীয় খরচ কে ডি-র সংস্থা অ্যালকেমিস্ট দিয়েছিল বলেও দাবি করেছেন ম্যাথু। ম্যাথু ফোনে বলেন, ‘‘দিল্লির বাড়ি থেকে স্টিং অপারেশেনের নানা যন্ত্রপাতি অর্থ্যাৎ ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ ও এডিটিং-র নানা যন্ত্র সিবিআইয়ের অফিসারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি উপস্থিত না থাকলেও, দিল্লির বাড়িতে এ দিন তাঁর স্ত্রী ছিলেন।

কলকাতা হাইকোর্টে নারদ নিয়ে যে তিন জন মামলা করেছিলেন, সেই অমিতাভ চক্রবর্তী, অজয় সারেঙ্গী ও ব্রজেশ ঝাঁ-কে রবিবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই অফিসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেরা করা হয়েছে।

Mathew Samuel K. D. Singh TMC Narada Sting Operation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy