Advertisement
১১ মে ২০২৪
kabir suman

Kabir Suman: যা করেছি, দরকার হলে আবার করব, বিতর্কের মধ্যেই সুমন-জবাব

পোস্টটি ‘পাবলিক’ও করা হয়নি। করা হয়েছে ফেসবুকের ‘ওনলি ফ্রেন্ডস’ বিভাগে। অর্থাৎ, যাঁরা সুমনের বন্ধুর তালিকায় আছেন, তাঁরাই পোস্টটি দেখতে পাবেন।

একটি বাংলা চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গে এক পুরুষকণ্ঠের ফোনালাপের রেকর্ডিং ঘিরে আপাতত সরগরম রাজ্য। সেই কণ্ঠের বাচনভঙ্গি এবং স্বর সুমনের সঙ্গে মেলে। যা নিয়ে সুমনের ফেসবুক পোস্ট।

একটি বাংলা চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গে এক পুরুষকণ্ঠের ফোনালাপের রেকর্ডিং ঘিরে আপাতত সরগরম রাজ্য। সেই কণ্ঠের বাচনভঙ্গি এবং স্বর সুমনের সঙ্গে মেলে। যা নিয়ে সুমনের ফেসবুক পোস্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ১১:৩৮
Share: Save:

তিনি যা করেছেন, তা দরকার হলেই আবার করবেন। জানিয়ে দিলেন কবীর সুমন। শনিবার সকালে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট করে সে কথা স্পষ্ট করেছেন সুমন। পাশাপাশিই লিখেছেন, ‘ফোনে, হোয়াটস্যাপে স্বাভাবিক ভাবেই আমি আক্রান্ত। এটাই হওয়ার কথা। আরও হবে। আমার যায়-আসে না। যা করেছি তা, দরকার হলেই, আবার করব।’

প্রসঙ্গত, একটি বাংলা চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গে এক পুরুষকণ্ঠের ফোনালাপের রেকর্ডিং ঘিরে আপাতত সরগরম রাজ্য। সেই কণ্ঠের বাচনভঙ্গি এবং স্বর সুমনের সঙ্গে মেলে। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন সেই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি। কিন্তু নেটমাধ্যমে সুমনের পক্ষে-বিপক্ষে মতামতের স্রোত বইতে শুরু করেছে। ঘটনাচক্রে, বিপক্ষমতই বেশি।

সেই ফোনালাপে ছাপার অযোগ্য বিভিন্ন কটূক্তি ছিল। সেই কণ্ঠ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে বলেছিল, যেন ওই কথা ‘ব্রডকাস্ট’ করা হয়। এমন অভিযোগও ছিল যে, ওই চ্যানেল (অথবা আপাতদৃষ্টিতে তাদের কর্তারা, ওই কণ্ঠের অভিযোগ, আরএসএস) প্রবীণ গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে মেরে ফেলছে! যে অভিযোগ সুমন-সহ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল সন্ধ্যার মতো প্রবীণ গায়িকাকে ‘পদ্মশ্রী’ খেতাব দিতে চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকার অন্যায় করেছে। নবতিপর গায়িকা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘটনাচক্রে, তার পরেই সন্ধ্যা কোভিডে আক্রান্ত হন। তিনি আপাতত শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সুমনের শনিবারের ফেসবুক পোস্ট বলছে, ফোনের ওই কণ্ঠ তাঁরই ছিল। যদিও সুমন ফোনালাপের প্রসঙ্গ তাঁর পোস্টে লেখেননি। পোস্টটি ‘পাবলিক’ও করা হয়নি। করা হয়েছে ফেসবুকের ‘ওনলি ফ্রেন্ডস’ বিভাগে। অর্থাৎ, যাঁরা সুমনের বন্ধুর তালিকায় রয়েছেন, তাঁরাই ওই পোস্টটি দেখতে পাবেন।

প্রসঙ্গত, বিজেপি ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের কাউন্সিলর সজল ঘোষ জানিয়েছেন, শনিবার মুচিপাড়া থানায় তাঁরা এফআইআর দায়ের করবেন কবীর সুমনের ‘অসভ্য’ ভাষার বিরুদ্ধে।

সুমন লিখেছেন, ‘আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছিলেন, কিছুর পক্ষে যুক্তি দিতে যেও না। তোমার বন্ধুদের তা দরকার পড়বে না। তোমার শত্রুরা তা বিশ্বাস করবে না। সাংবাদিক, সংবাদমাধ্যম, শিল্পীর কোনও আলাদা স্বাধীনতা থাকতে পারে বলে মনে করি না। যে কোনও মানুষের যে অধিকার, তাদের অধিকার ততটাই। একটি বিশেষ চ্যানেল ও তার সাংবাদিকরা দিনের পর দিন যা করে যাচ্ছে, তার জবাব দিয়েছি উপযুক্ত ভাষায়। সুরসম্রাজ্ঞীর অপমানের বিরুদ্ধে যে সাংবাদিক বৈঠক হয়েছিল সেখানে কোন চ্যানেলের কোন সাংবাদিক কী করেছে, বলেছে আমি ভুলিনি।’

তার পরে সুমন লিখেছেন, ‘সারা দুনিয়ায় সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকরা তাদের ইচ্ছেমতো পথে চলে। যে কোনও উপায় নেয়। যার হাতে চ্যানেল-কাগজ কিছু নেই, সে-ও তার ইচ্ছেমতো উপায় নেবে। এ বিষয়ে যাঁদের আগ্রহ, জার্মান কাহিনিকার হাইনরিশ্ ব্যোল্ (Heinrich Boell)-এর লেখা The Lost Honour of Katharina Blum উপন্যাসটি পড়ুন। বইটি পড়া দরকার। এক প্রাক্তন সাংবাদিক ও নিয়মিত পাঠক হিসেবে বলছি।’

কবীর সুমনের সেই পোস্ট।

কবীর সুমনের সেই পোস্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সুমন পোস্ট শেষ করেছেন, ‘জয় বাংলা, জয় বাংলা খেয়াল, জয় সুরসম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়’ লিখে। তার ঠিক আগেই লিখেছেন, ‘ফোনে, হোয়াটস্যাপে স্বাভাবিকভাবেই আমি আক্রান্ত। এটাই হবার কথা। আরও হবে। আমার যায় আসে না। যা করেছি তা, দরকার হলেই, আবার করব।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে ওই ফোনালাপ ‘ভাইরাল’ হওয়ার পর শুক্রবার রাতে কবি শ্রীজাত ওই বিষয়ে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন। যাতে তিনি জানান, শিল্প আর শিল্পীর স্বাধীনতার আড়ালে যে যা খুশি করতে পারেন না। শ্রীজাত উল্লেখ করেন সুমনেরই একটি গানের লাইন— ‘বিরোধীকে বলতে দাও।’

শ্রীজাতের পোস্ট সম্পর্কে অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও উচ্চবাচ্য করেননি সুমন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kabir suman Controvesy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE