প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতিতে কালীপুজো-সহ আগামী উৎসবগুলিতে বাজি বিক্রি এবং পোড়ানো বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন অজয়কুমার দে নামে হাওড়ার এক ব্যক্তি। ওই মামলায় কালীপুজো, ছটপুজো, কার্তিক পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোর মণ্ডপে ভিড় নিষিদ্ধ ও নজরদারি বাড়ানোর আর্জিও জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি হতে পারে। অজয়বাবুর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার জেরেই দুর্গাপুজোয় মণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কালীপুজোয় বাজি পোড়ানো নিয়ে বারবার আপত্তি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী ও চিকিৎসকেরা। বাজির ধোঁয়া কোভিড পরিস্থিতিতে বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফে এখনও তেমন সক্রিয়তা দেখা যায়নি। অনেকেই বলেছিলেন, বিপদ ঠেকাতে হয় তো ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। সেটাই সত্যি হল। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সচেতনতার উপরেই জোর দিচ্ছে। বহুতল আবাসনগুলিকে নিয়ে বৈঠকও ডেকেছে। তবে বছরের পর বছর এই বৈঠক করে লাভ কী হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন পরিবেশপ্রেমীদের মনে।
মামলার আর্জিপত্রে বলা হয়েছে, বাজির ধোঁয়া যে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তা বারবার বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা বলেছেন। কিন্তু বাজি বাজার না বসলেও পাড়ায়-পাড়ায় বাজি বিক্রি চলছে। তাই মামলাকারীর আর্জি, রাজ্য সরকারকে বাজি বিক্রি ও পোড়ানো সম্পূর্ণ বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হোক। প্রশাসন সূত্রের খবর, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে সরকার সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি। আদালতের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। যদিও অনেকে বলছেন, আদালতের নির্দেশ পেতে পেতে অনেক দিন গড়িয়ে যাবে। চোরাপথে, পাড়ায় পাড়ায় বাজি বিক্রিও হবে। কালীপুজোর রাতে চোর-পুলিশ খেলে তা বন্ধ করা সম্ভব নয়।
মামলার আর্জিপত্রে বলা হয়, বারাসত-নৈহাটির কালীপুজো, চন্দননগর-কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রীপুজো, বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পুজো এবং কলকাতা-আসানসোলের ছটপুজোয় প্রবল জনসমাগম হয়। যে যুক্তিতে দুর্গামণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেই একই যুক্তিতে ওই মণ্ডপগুলিতেও দর্শনার্থী নিষিদ্ধ করা হোক। ছটপুজোর ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সরোবরে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা এবং প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ করা হয়েছে। মামলাকারীর আর্জি, কলকাতা-সহ রাজ্যের জলাশয় ও নদীর ঘাটগুলিকে ছট পুজোর দিনগুলিতে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে ঘোষণা করা হোক। সব পুজোয় শোভাযাত্রাও নিষিদ্ধ হোক। ছট পুজো করতে যাওয়া মানুষদের শুধু ধর্মীয় আচার পালনের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে পাস ইস্যু করা হোক।
দুর্গাপুজোয় বিভিন্ন পুজো কমিটির বিরুদ্ধে নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, মণ্ডপে ভিড়ের ছবির ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্থানীয় থানা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে। পুজো কমিটির লিখিত ব্যাখ্যা সেগুলি আদালতে পেশ করা হবে। তবে জেলার পুজোগুলির ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট হয়নি। এ দিন দায়ের করা মামলার আর্জিপত্রে অজয়বাবু আবেদন করেছেন, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোর মণ্ডপে সিসিটিভি বাধ্যতামূলক করা হোক। জলাশয় ও নদীর ঘাটগুলিতে সিসিটিভির পাশাপাশি ড্রোন দিয়েও নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy