Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
হুগলিতে কাঠগড়ায় বেলাগাম পুলকার
Kalyan Banerjee

কড়া আইনের পক্ষে সওয়াল কল্যাণের

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়ায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে যাওয়ার পথে পোলবায় পড়ুয়া বোঝাই একটি পুলকার দিল্লি রোডের ধারে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়।

সহমর্মী: ঋষভের বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন কল্যাণ। —নিজস্ব িচত্র

সহমর্মী: ঋষভের বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন কল্যাণ। —নিজস্ব িচত্র

প্রকাশ পাল 
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৭
Share: Save:

বছর সাতেকের ঋষভ সিংহের মৃত্যুতে রাজ্যজুড়ে বেনিয়মের পুলকার নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে আঙুল উঠছে পরিবহণ দফতরের দিকেও। পুলকার নিয়ন্ত্রণে এ বার শক্ত আইনের পক্ষে সওয়াল করলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

রবিবার শ্রীরামপুরে ঋষভের বাড়িতে তার পরিজনদের সমবেদনা জানাতে আসেন সাংসদ দোলা সেন, মন্ত্রী অসীমা পাত্রেরা। পুলকার দুর্ঘটনার পর থেকেই ঋষভের পরিবারের পাশে রয়েছেন সাংসদ কল্যাণ। এ দিন তিনিও ওই বাড়িতে এসেছিলেন। সাংসদকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে দেখা যায় ঋষভের বাবা, শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ ওরফে পাপ্পুকে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কল্যাণ বলেন, ‘‘পুলকার নিয়ে এ বার কোনও শক্ত আইন যাতে আনা যায়, পরিবহণমন্ত্রীর কাছে এটুকু আশা করব। বেপরোয়া ভাবে বা অবহেলা করে গাড়ি ছোটানো হলে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’ লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া এবং নবীকরণের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ। তিনি বলেন, ‘‘লাইসেন্স নবীকরণ প্রথামাত্র হয়ে ঠেকেছে। যে কেউ যাচ্ছে আর লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছে। নবীকরণ করিয়ে নিচ্ছে। এখানে সরকারি পদক্ষেপ আরও অনেক শক্ত, কঠোর হওয়া দরকার। পুলকারের নির্দিষ্ট আইন হওয়া উচিত। মোটরযান দফতর দেখুক কী করা উচিত।’’ জেলা মোটরযান দফতরের আধিকারিকদের দাবি, বেনিয়মের পুলকার বন্ধ করতে অভিযান বাড়ানো হবে। ঋষভের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে আজ, সোমবার স্কুলগাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার পুলকার চালকদের একটি সংগঠন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়ায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে যাওয়ার পথে পোলবায় পড়ুয়া বোঝাই একটি পুলকার দিল্লি রোডের ধারে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। সেই দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ঋষভ শনিবার ভোরে এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যায়। ওই দুর্ঘটনার পর থেকেই অভিযোগ ওঠে, মাঝপথে গাড়ি বদলে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া হত। বদলে যেতেন চালকও। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, ওই ঘটনায় ধৃত গাড়ি-মালিক শেখ শামিম আখতার আফরোজও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জেরায় জানিয়েছেন, শ্রীরামপুর থেকে তিনি বাচ্চাদের একটি গাড়িতে তুলতেন। অন্য একটি গাড়িতে শেওড়াফুলি-বৈদ্যবাটী এলাকার পড়ুয়াদের তুলতেন পবিত্র দাস (দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির চালক) বা অন্য কেউ। তারপর বৈদ্যবাটীর একটি পেট্রোল পাম্পে দু’টি গাড়ির বাচ্চাদের নামিয়ে অপেক্ষাকৃত বড় গাড়িতে তুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া হত।

পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকারের মালিক কাগজ-কলমে বারুইপাড়ার বাসিন্দা রহিত কোলে। রহিত পুলিশকে জানান, গত বছরের মার্চ মাসে তিনি শামিমকে গাড়িটি বিক্রি করে দেন। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রহিত কিছু নথিপত্র পুলিশকে জমা দিয়েছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, তিনি ৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকায় শামিমকে গাড়িটি বেচেছেন। সেই নথি পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার পরই রহিত-শামিমকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyan Banerjee Poolcar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE