সকালে জামিন পেয়েছিলেন, রাতে অন্য এক মামলায় আবার ‘গ্রেফতার’ হলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। মুক্তির আগেই তাঁকে অন্য মামলায় গ্রেফতার হিসাবে দেখানো হল। ফলে জামিন পেলেও এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না কল্যাণময়।
স্কুলে গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগের মামলাটিতে বুধবার সকালে জামিন পান কল্যাণময়। কলকাতা হাই কোর্ট শর্তসাপেক্ষে তাঁকে জামিন দিয়েছিল। কিন্তু রাতে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে তদন্তকারী সংস্থা কল্যাণময়কে আবার ‘গ্রেফতার’ হিসাবে দেখায়। এ ক্ষেত্রে নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
নবম-দশমের মামলায় ১১ মাস আগেই সিবিআই চার্জশিট দিয়েছিল। তা হলে এত দিন পরে কেন কল্যাণময়কে ওই মামলায় গ্রেফতার হিসাবে দেখানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন ওঠে। আইনজীবী এবং বিচারকদের সেই প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী আধিকারিক জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। তাই এই মুহূর্তে কোনও অভিযুক্তকে জেলের বাইরে বেরোতে দিতে চাইছেন না তাঁরা। তাতে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কল্যাণময়কে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁকে জামিন দেয়। তবে আদালত জানায়, তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে কল্যাণময়কে। কলকাতার বাইরে তিনি যেতে পারবেন না। কল্যাণময় প্রবেশ করতে পারবেন না বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায়। আদালত আরও জানিয়েছে, পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে পাসপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা রাখতে হবে।
বুধবার সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উচ্চ আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, প্রায় ১৪ মাস জেলে বন্দি থাকার পরেও সিবিআই এখনও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি। কেন এক জন অভিযুক্তকে এত দিন বন্দি রাখা হবে, তারও সদুত্তর দিতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থাটি। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কল্যাণময় একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি। তাঁর যথেষ্ট সামাজিক পরিচিতি রয়েছে। আগেও তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। ফলে জামিন পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। তা ছাড়া কল্যাণময় সরকারি পদ ব্যবহার করে দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু বর্তমানে তিনি ওই পদে নেই।
শুধু কল্যাণময় নন, নবম-দশম মামলায় বুধবার আরও দু’জনকে ‘গ্রেফতার’ হিসাবে দেখানো হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন অশোক সাহা এবং সুব্রত সামন্ত রায়। তদন্তের স্বার্থেই তাঁদের জেল হেফাজতে রাখতে চায় সিবিআই।