Advertisement
E-Paper

ঘোল খাইয়েছেন কারনান-পুত্রও

বিশেষ দলের দাবি, কারনানের ছেলেকে তাঁরা বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু ক’দিন পরে বুঝতে পারেন ছেলেই কারনানকে পালাতে সাহায্য করেছেন। দলের এক সদস্যের মন্তব্য, ‘‘বাবা-ছেলের এমন কম্বিনেশন খুব একটা চোখে পড়ে না। বড়ে মিয়াঁ তো বড়ে মিয়াঁ, ছোটে মিয়াঁ ভি সুভান আল্লাহ।’’ বিশেষ দলের দাবি, ছেলের মাধ্যমে পুলিশকে অপেক্ষা করিয়ে কারনান চলে যান নামাক্কুল নামে একটি জায়গায়।

সুনন্দ ঘোষ ও শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০৫:৫৩

এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়।

বাবা শুধু নয়, সঙ্গে ছেলেও ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন পুলিশকে। কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিন্নাস্বামী কারনানকে ধরতে গিয়ে তাঁর ছেলে সুগ্গানের উপরে বিশ্বাস করে ডুবতে বসেছিল রাজ্য পুলিশের বিশেষ দল।

নবান্ন সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে রাজ্য পুলিশের ডিজি হোমগার্ডের নেতৃত্বে বিশেষ দলটি সোজা চেন্নাই চলে যায়। সেখানে নেমেই কারনানের বাড়িতে হানা দেয় দলটি। কিন্তু বিচারপতি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর ছেলের সঙ্গে সেখানে আলাপ হয় পুলিশের দলের। বিশেষ দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘বিচারপতি কারনানের ছেলে সুগ্গান পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি বাবার জন্য আমাদের দু-তিনদিন অপেক্ষা করতে বলেন। তিনিই বাবাকে খুঁজে এনে দেবেন বলে আশ্বাসও দেন।’’

বিশেষ দলের দাবি, কারনানের ছেলেকে তাঁরা বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু ক’দিন পরে বুঝতে পারেন ছেলেই কারনানকে পালাতে সাহায্য করেছেন। দলের এক সদস্যের মন্তব্য, ‘‘বাবা-ছেলের এমন কম্বিনেশন খুব একটা চোখে পড়ে না। বড়ে মিয়াঁ তো বড়ে মিয়াঁ, ছোটে মিয়াঁ ভি সুভান আল্লাহ।’’ বিশেষ দলের দাবি, ছেলের মাধ্যমে পুলিশকে অপেক্ষা করিয়ে কারনান চলে যান নামাক্কুল নামে একটি জায়গায়। পুলিশ প্রথম বার ধোঁকা খেলেও কিছু দিন পরেই নামাক্কুলের ঠিকানা জানতে পারে। কিন্তু তত দিনে ফের ওই জায়গা বদল করে কারনান চলে যান ভাটাপোলান নামে এক পল্লিতে। সেখানে বেশি দিন থাকেননি তিনি। এর পরে ডেরা বাঁধেন কেরল এবং তামিলনাড়ুর সীমানায় ইচেনারে। যা কোয়েম্বত্তূর থেকে ১৮ কিলোমিটার দুরে। গত ১৬ জুন থেকে সেখানেই এক রিসর্টে থাকছিলেন ওই প্রাক্তন বিচারপতি।

রাজ্য পুলিশের এক ডিজি, তিন এডিজি দফায় দফায় চেন্নাইতে গেলেও নিট ফল ছিল শূন্য। নবান্ন সূত্রে বলা হয়, চোর বা দুষ্কৃতী ধরতে অভ্যস্ত পুলিশের কারনানকে ধরার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ভাষা। তা ছাড়া বিচারপতিকে তামিলনাড়ুর প্রশাসনিক কর্তাদের বড় একটা অংশও সাহায্য করছিলেন বলে দাবি রাজ্য পুলিশের। বিশেষ দলে এমন তিন জন আইপিএস অফিসার ছিলেন যাঁরা তামিল জানেন। তাঁদের দিয়ে স্থানীয় ‘সোর্স’ তৈরির দিকে নজর দেয় কলকাতা থেকে যাওয়া বাহিনী।

তখনই বিশেষ দল জানতে পারে, বিভিন্ন ডেরায় বিচারপতির থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পিছনে রয়েছেন এক জন আইনজীবী এবং চেন্নাইয়ের এক নির্মাণ ব্যবসায়ী। ইচেনারে যে রিসর্টে কারনান থাকেন তার দেখভাল করে ওই নির্মাণ ব্যবসায়ীর সংস্থাই। ওই রিসর্টে কারনান একাই থাকতেন। বাইরে থেকে তাঁর খাবার আসত সময় মতো। যে লোকটি খাবার নিয়ে যেতেন শেষ পর্যন্ত তাঁর সাহায্যেই পলাতক বিচারপতির দো়রগোড়ায় হাজির হয় পুলিশ।

আজ না হয় কাল তাঁকে যে পুলিশ ধরবেই তা জানা সত্ত্বেও, কেন যে এ ভাবে এত দিন বিচারপতি কারনান লুকোচুরি খেললেন তা মাথায় ঢুকছে না বিশেষ দলের সদস্যদের।

Justice CS Karnan কারনান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy