Advertisement
E-Paper

রাজ্যকে নিরাপত্তার খোঁচা দিয়ে হঠাৎ বিবৃতি ত্রিপাঠীর

রাজ্যের ‘নিরাপত্তাহীনতা’র দিকে আঙুল তুলে প্রকাশ্য বিবৃতি দিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪৩
কেশরীনাথ ত্রিপাঠী

কেশরীনাথ ত্রিপাঠী

রাজ্যের ‘নিরাপত্তাহীনতা’র দিকে আঙুল তুলে প্রকাশ্য বিবৃতি দিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে দমদমের বিস্ফোরণ এবং মেডিক্যাল কলেজের অগ্নিকাণ্ড— পরপর দু’টি ঘটনার উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল। দু’টি ঘটনারই উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত ও নিরাপত্তার নজরদারি বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গেই মন্তব্য করেছেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ড এবং সেতুভঙ্গের মতো অঘটন এখন নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা খুব উদ্বেগের।’’

রাজ্যপালের এই বিবৃতি সম্পর্কে বিরোধীরা সরব হলেও প্রতিক্রিয়া জানায়নি শাসক দল। বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস প্রায় একই সুরে রাজ্যপালের বিবৃতিকে সমর্থন জানিয়েছে। ফলে বিষয়টিতে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক মাত্রা। অনেকের মতে, রাজভবন এ ক্ষেত্রে সেই রাজনীতির ভরকেন্দ্র হল।

আইনশৃঙ্খলার মতো ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় নিয়ে রাজ্যপালেরা সচরাচর প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। কারণ, রাজ্যপাল স্বয়ং রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এবং সরকারের অভিভাবক। নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের পরে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী ‘হাড় হিম করা সন্ত্রাস’ বলে বিবৃতি দিয়েছিলেন। রাজ্য-রাজনীতি তাতে তোলপাড় হয়েছিল। তবে সেই ঘটনার তীব্রতা ছিল নজিরবিহীন।

কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বৃহস্পতিবার যে ঘটনাগুলি উল্লেখ করেছেন, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে সেগুলি অনভিপ্রেত হলেও নন্দীগ্রামের সঙ্গে তুলনীয় নয়। তাই রাজ্যপাল কেন সরকারের যথাযোগ্য পদাধিকারীদের ডেকে বিষয়টি আলোচনা না করে আগেই প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলেন, বিভিন্ন মহলে সে প্রশ্নও উঠছে।

দমদম বিস্ফোরণ হয়েছে মঙ্গলবার। মেডিক্যালে আগুন লাগে বুধবার। রাজ্যপালের বিবৃতি এল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। রাজভবন সূত্রের খবর, এ দিন তিনি শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। বিকেলে কলকাতায় ফেরেন।

বিবৃতিতে রাজ্যপাল প্রথমেই উল্লেখ করেছেন দমদমের প্রসঙ্গ। নিহত বালকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি তিনি রাজ্যের নিরাপত্তারক্ষা ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সকলকে বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে, সে জন্য উপযুক্ত সতর্কতা দরকার। চাই উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত। যার অর্থ, রাজ্যের নিরাপত্তা-নজরদারিতে যে ‘ঘাটতি’ আছে, রাজ্যপাল সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন। মেডিক্যাল কলেজের অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কেও উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চেয়েছেন তিনি। এই সূত্রেই অগ্নিকাণ্ড এবং সেতুভঙ্গের মতো ঘটনা নিয়মিত ঘটছে বলে কার্যত কটাক্ষ করেছেন তিনি।

বিরোধীদের অভিযোগ, পরপর এতগুলি ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতাই প্রকট হয়েছে। সরকারের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে কোনও ফল হয়নি। তাই রাজ্যপালকেও বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে হচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে রাজ্যপালের এই উদ্বেগ স্বাভাবিক।’’ বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘যে সব ঘটনা ঘটছে, তাতে রাজ্য সরকার যারা চালাচ্ছে, তারা ছাড়া আর সকলেই উদ্বিগ্ন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল যা বলছেন, কয়েক দিন ধরে আমরাও তাই বলছি। নাগরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে না পারলে সেই সরকারের তো পদত্যাগ করা উচিত!’’

Keshari Nath Tripathi Poke State Government Security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy