প্রতীকী ছবি
পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অসীম দাসের হত্যাকাণ্ডের পরেই বাংলা থেকে পালিয়ে সে গা-ঢাকা দিয়েছিল তামিলনাড়ুর আদিয়ারে। মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে নাম ভাঁড়িয়ে নিয়েছিল নির্মাণকর্মীর কাজ। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সিআইডি-র জালে ধরা পড়ে গেল অসীম-হত্যায় মূল অভিযুক্ত আজিজুল শেখ ওরফে লঙ্কা। তার বাড়ি বীরভূমের পাড়ুইয়ে। সোমবার বিকেলে তাকে আদিয়ারে গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনার জন্য মঙ্গলবার তাকে স্থানীয় আদালতে তোলা হয়। এই নিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডে ১০ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি।
সিআইডি-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, অসীমবাবুকে গুলি করেছিল বছর কুড়ির আজিজুলই। ‘সুপারি কিলার’ বা ভাড়াটে খুনি হিসেবে এলাকায় কুখ্যাতি রয়েছে তার। আজিজুলের সঙ্গী মহম্মদ সুরজকে অক্টোবরে তামিলনাড়ুরই চেন্নাইয়ের মানালিতে গ্রেফতার করে সিআইডি।
সিআইডি জানাচ্ছে, আজিজুল ও সুরজের বাড়ি বীরভূমের পাড়ুইয়ের ঘিদোহ গ্রামে। ১২ জুলাই তারা মোটরবাইকে চেপে মঙ্গলকোটে পৌঁছয়। বাইক চালাচ্ছিল সুরজ। পিছনে বসে ছিল আজিজুল। পিছনে বসা অবস্থাতেই সে গুলি করে অসীমবাবুকে। তার পরে দু’জনেই পালিয়ে যায়। প্রথমে জানা গিয়েছিল, গুলি চালিয়েছে সুরজ। কারণ, সে-ও ‘শার্প শুটার’। পরে জেরার মুখে উঠে আসে আজিজুলের নাম।
তদন্তকারীরা জানান, আজিজুল ইদানীং মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিল না। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অসীম-হত্যার অব্যবহিত পরে আজিজুল একটি ফোন ব্যবহার করেছিল। যার টাওয়ার লোকেশন ছিল তামিলনাড়ুর আদিয়ার। তবে অগস্টের পরে সে আর কোনও নম্বর ব্যবহার করেনি। আদিয়ারে থাকছিল অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে। তদন্তকারীদের একটি দল গত কয়েক দিন ধরে ঘাঁটি গেড়ে ছিল ওই এলাকায়। বিভিন্ন নির্মীয়মাণ বাড়িতে ঘুরে ঘুরে যেখানে আজিজুল কাজ করছিল, সেই জায়গাটি শনাক্ত করেন তদন্তকারীরা। সোমবার গোয়েন্দারা সেখানে হানা দেন। তার পরেও দোকানে যাওয়ার অছিলায় পালানোর চেষ্টায় ছিল আজিজুল।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, গত বছর সিউর-লাখুরিয়া পিচরাস্তায় কালভার্টের কাছে লাখুরিয়ার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি অসীমবাবুকে গুলি করে খুনের মামলায় পুজোর ঠিক আগে বর্ধমান আদালতে ন’জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় সিআইডি। তাতে আজিজুলকে পলাতক হিসেবে দেখানো হয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, চার্জশিটে নাম রয়েছে নানুরের বাসিন্দা এবং এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত রাজু শেখেরও। সিআইডি-র অভিযোগ, অসীম-হত্যার মূল চক্রী রাজু। অসীমকে খুন করার জন্য আজিজুলকে সুপারি দিয়েছিল সে-ই। এলাকা দখল এবং পদের দাবি পাল্টা দাবিকে কেন্দ্র করেই এই খুন বলে জানায় সিআইডি। রাজুকে অগস্টে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy