প্রতীকী ছবি।
কলকাতার প্রায় কোনও মেট্রো খাতেই আশানুরূপ বরাদ্দ জুটল না রেল বাজেটে।
এ নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এটা বাংলাকে বঞ্চিত করার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কেন্দ্রের বাজেটে নতুন প্রকল্প পায়নি বাংলা। উল্টে চালু মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করা হচ্ছে। এটা মানব না।
বরাদ্দ কমানোর কথা মেনে নিলেও বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমরা কিছু করব না। যদি রাজ্য দিল্লির কাছে দরবার করতে যায় এবং আমাদের ডাকে তা হলে নিশ্চই যাব।”
মঙ্গলবার সংসদে পিঙ্ক বুক প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায়, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বরাদ্দ গত বারের তুলনায় এক লাফে ৮৩৭ কোটি টাকা কমেছে। সেক্টর ফাইভ থেকে হলদিরাম পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সম্প্রসারণ প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ১ লক্ষ টাকা। ফলে ওই প্রকল্পকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল।
তিনটি নির্মীয়মাণ প্রকল্পে অল্প কিছু বরাদ্দ বাড়লেও নতুন তিনটি সম্প্রসারণ প্রকল্পের সমীক্ষা খাতে কোনও অর্থই বরাদ্দ করা হয়নি। এই প্রকল্পগুলি হল বারাসাত-ব্যারাকপুর, নিউ গড়িয়া-বারুইপুর এবং জোকা-ডায়মন্ড হারবার। ফলে শহরতলিকে মেট্রো পথে যুক্ত করার বিষয়টি অগ্রাধিকারের তালিকা থেকে সরে গেল বলেই মনে করছেন অনেকে।
নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভাল অবস্থায় রয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। চলতি বছরের জুন মাসে ওই পথে সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগানের মধ্যে মেট্রো চলাচল শুরু হওয়ার কথা। স্টেশনগুলিতে শেষ পর্যায়ের কাজ চলার পাশাপাশি আগামী মার্চ মাস থেকে রেক আসার কথা। এসপ্ল্যানেডে তিনটি মেট্রোর সংযোগকারী স্টেশন তৈরির কাজও চলছে। এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত পথে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজও কয়েক মাসের মধ্যে শুরু হওয়ার কথা। ফলে ওই প্রকল্পে অর্থের প্রয়োজন। গত ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের বাজেটে ওই প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ছিল ১৯৩৭ কোটি টাকা। এ বার তা কমে হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা।
জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো প্রকল্পে বিগত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৫০ কোটি টাকা। এ বার ওই প্রকল্পে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ১৬৯.৩৬ কোটি টাকা। গত বারের তুলনায় জমি জট খানিকটা কাটিয়ে উঠতে পারায় ওই প্রকল্পে বরাদ্দ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ২৫০কোটি টাকা। এ বার বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ৩৪৪কোটি টাকা। ওই প্রকল্পেও রাজারহাট সংলগ্ন মহিষবাথানে জমি জট কেটেছে।
নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর-বারাসাত মেট্রো প্রকল্পে গত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ২২০কোটি টাকা। এ বার ওই বরাদ্দ সামান্য কমে হয়েছে ২১২.৫ কোটি টাকা। নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোপথের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে।
নোয়াপাড়া থেকে বরাহনগর-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্পে গত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১০০ কোটি টাকা। এ বার বরাদ্দ অনেকটাই কমেছে। ওই প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ৪২.৫ কোটি টাকা। কামারহাটিতে জমি জট অনেক কাটলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মন্থর।
যদিও এ প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা এ রাজ্যে বিরোধী দল। আমাদের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা নয়। তাই আমরা নিজেরা মেট্রো প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে কিছুই বলব না। কিন্তু রাজ্য সরকার আমাদের সাহায্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করতে চাইলে তা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy