অপরাধ কিংবা কোনও ঘটনার তদন্তের সুবিধায় কলকাতা পুলিশের প্রতিটি
ডিভিশন এবং গোয়েন্দা বিভাগে একটি করে তদন্ত সহায়তাকারী ইউনিট গঠন করেছে লালবাজার। ওই ইউনিট গঠন করা নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের নগরপাল
মনোজ বর্মা এক নির্দেশনামা জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, তদন্ত সহায়তাকারী ইউনিটে থাকবে ডিভিশনের এক জন করে ইনস্পেক্টর, দু’জন করে অফিসার এবং দু’জন কনস্টেবল। ডিভিশনের থানাগুলি থেকে নেওয়া হবে ওই অফিসার এবং কনস্টেবল। এক একটি থানা এক এক দিন ওই ইউনিটের জন্য তাদের অফিসারকে পাঠাবে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ডিভিশনে ওই ইউনিট কাজ শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, কন্ট্রোল রুম বা যে কোনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে অবহিত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে তৎক্ষণাৎ পৌঁছে যেতে হবে ওই ইউনিটের সদস্যদের। ইউনিটের প্রধান কাজ হবে ঘটনার পরেই ঘটনাস্থল বা থানায় পৌঁছে আইনি ও পদ্ধতিগত সব দিকে খতিয়ে দেখে এফআইআর লেখাতে সহায়তা করা। ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ধারা মেনে ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো করা থেকে
শুরু করে সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করা হবে। এক পুলিশকর্তা জানান, ইউনিটের সদস্যেরা থানার অফিসারদের সাহায্য করবেন। গ্রেফতারের নথি তৈরি করা, মামলার নথি এবং তথ্য সব কিছু সুরক্ষিত করবেন ইউনিটের সদস্যেরা। এ ছাড়াও তদন্ত এবং মামলার শুরুতে থানাকে প্রযুক্তিগত এবং আইনি ইনপুট প্রদান করবেন তাঁরাই।
পুলিশ জানিয়েছে, ডিভিশনের তদন্তে সহায়তাকারী ইউনিট মামলার বিভিন্ন প্রমাণ্য নথি সংরক্ষণের জন্য মোবাইল ফরেন্সিক ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করবে। তা ছাড়া ওই তদন্তকারী ইউনিটের ইনস্পেক্টরকে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
লালবাজার জানিয়েছে, বাড়ি ভেঙে পড়া, অগ্নিকাণ্ড, দুর্যোগ বা অন্যান্য বড় সংবেদনশীল ঘটনায় ইউনিটের সদস্যদের বাধ্যতামূলক ভাবে উপস্থিত থাকতে হবে। কলকাতা পুলিশের মোবাইল কমান্ড সেন্টার বড় কোনও ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হলে ইউনিটের সদস্যদের সেখানে উপস্থিত সেন্টারের কমান্ডারের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগে সহায়তাকারীর ভূমিকায় যে দল থাকবে, তারা ডিভিশনের সহায়তা ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় রাখবে এবং আইনি ও তদন্তমূলক সাহায্য করবে।
লালবাজার ওই ইউনিট গঠন করলেও তাতে বাহিনীর সদস্যদের থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, কয়েকটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ থানা ছাড়া বেশির ভাগ থানায় অফিসার অপ্রতুল। বিশেষ করে সাব ইনস্পেক্টরের অভাবে ভুগছে থানাগুলি। সেখানে প্রতিদিন এক জন করে দক্ষ অফিসারকে তদন্ত সহায়তাকারী ইউনিটে পাঠালে থানার কাজ কী ভাবে হবে, প্রশ্ন সেখানে। যদিও এ নিয়ে কোনও পুলিশকর্তাই কিছু বলতে চাননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)