ধৃত রাজু সাউকে হেয়ার স্ট্রিট থানা থেকে আরামবাগে নিয়ে যাচ্ছে হুগলি জেলা পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
আরামবাগের অপহৃত এক ব্যবসায়ীকে কলকাতা থেকে উদ্ধার করল হেয়ার স্ট্রিট থানা এবং হুগলি জেলা পুলিশের বিশেষ বাহিনী। সোমবার সকালে, অপহরণকারীদের হাতে মুক্তিপণের টাকা তুলে দেওয়ার সময়ে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ এক জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। ধৃতকে জেরা করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মধ্য কলকাতার গোপন ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃতকে।
রবিবার সকাল থেকে নিঁখোজ ছিলেন জামাকাপড়ের ব্যবসায়ী শেখ ইমতিয়াজ আলি। তাঁর বাড়ি হুগলির আরামবাগে। ৩৮ বছরের ওই ব্যবসায়ীর পরিবার দিনভর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে সন্ধ্যায় আরামবাগ থানায় অভিযোগ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যবসার কাজে কলকাতা যাচ্ছেন বলে বাড়িতে বলে বেরিয়েছিলেন ইমতিয়াজ। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোনর কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই তাঁর মোবাইল ফোন সুইচড অফ বলতে থাকে।
লোকসভা ভোটের সব খবর পড়তে ক্লিক করুন
এর পর ওই সন্ধ্যায় ইমতিয়াজের ফোন থেকেই তাঁর ভাইয়ের কাছে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন আসতে শুরু করে। সেই ব্যক্তি দাবি করেন যে, ইমতিয়াজ তাঁর হেফাজতে রয়েছেন এবং ১০ লাখ টাকা দিলে তবেই তাঁকে ছাড়া হবে। ঘটনার কথা পুলিশকে জানান ইমতিয়াজের ভাই। পুলিশের পরামর্শে তিনি অপহরণকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণে ‘রফা’ হয়। ঠিক হয়, সোমবার ভোরবেলা কলকাতায় টাকা দেওয়া হবে।
আরও পডু়ন: জটিল হচ্ছে গোয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসরে নিতিন গডকড়ী, রাতভর বৈঠক শরিক দলগুলোর সঙ্গে
আরও পড়ুন: রাজনীতির লড়াইয়ে ফের পুরনো ভূমিকায়, রাজ্য বিজেপির প্রচার গান রেকর্ডিং বাবুলের
গভীর রাতেই অপহৃতের ভাইকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় পৌঁছয় আরামবাগ থানার পুলিশ। তাঁরা হেয়ার স্ট্রিট থানার কাছে সাহায্য চান। এ দিন সকালে অপহৃতের ভাই অপহরণকারীদের সঙ্গে ফের কয়েক দফা কথা বলে মেট্রো সিনেমা হলের সামনে টাকা দেওয়ার জায়গা নির্দিষ্ট করেন। সাদা পোশাকে তাঁর সঙ্গে যায় আরামবাগ থানার পুলিশ। তার আগেই সাদা পোশাকে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে হেয়ার স্ট্রিট থানা। ওই থানার এক আধিকারিক বলেন, “অপহরণকারী টাকার ব্যাগ হাতে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে পালানোর চেষ্টা করছিল। আমাদের টিম ওকে নজরে রেখেছিল। আমরা অভিযুক্তকে টাকা-সহ পাকড়াও করি।” ধৃতকে নিয়ে আসা হয় থানায়। সেখানে তাকে জেরা করে জানবাজার এলাকার একটি বাড়িতে থাকা ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত ইমতিয়াজকে। ডিসি সেন্ট্রাল শুভঙ্কর সিনহা সরকার বলেন, “অপহৃতকে উদ্ধার করে হুগলি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।”
জেরায় ধৃত জানিয়েছে তাঁর নাম রাজু সাউ। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজু দাবি করেছে, সে নিজেও জামাকাপড়ের ব্যবসা করে। আগের একটি ব্যাবসা সংক্রান্ত লেনদেনের সূত্রে সে ইমতিয়াজের কাছে টাকা পেত। সেই টাকা আদায় করতেই অপহরণের ছক করে।” পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যবসা সংক্রান্ত কথাবার্তার টোপ দিয়ে কলকাতায় নিজের ডেরায় ইমতিয়াজকে ডেকে আনে অপহরণকারীরা। তার পর তাঁকে আটকে রেখে মুক্তিপণ চায়। তবে তদন্তকারীরা রাজুর কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাঁরা এ দিন রাজুকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন। তদন্তকারীদের সন্দেহ রাজু ছাড়াও গোটা অপারেশনে আরও কেউ রয়েছে। রাজুকে জেরা করে বাকিদের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy