Advertisement
E-Paper

আদালতের গুঁতোয় এ বার পুলিশি সাহায্য পেল বন্দর

এ যেন পুরো উলট পুরাণ। ১৩ সেপ্টেম্বর যে জমির দখল নিতে গিয়ে বিন্দুমাত্র পুলিশি সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ, বুধবার জোরদার পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই সেই জমি মাপজোকের কাজ সারলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিনা বাধায় দু’ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত কাজ সেরে ফিরে গেলেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ১৭:২৯
মাপজোখের সময় পুলিশি নিরাপত্তা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

মাপজোখের সময় পুলিশি নিরাপত্তা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

এ যেন পুরো উলট পুরাণ।

১৩ সেপ্টেম্বর যে জমির দখল নিতে গিয়ে বিন্দুমাত্র পুলিশি সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ, বুধবার জোরদার পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই সেই জমি মাপজোকের কাজ সারলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিনা বাধায় দু’ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত কাজ সেরে ফিরে গেলেন তাঁরা।

তবে এই দিন সংবাদ মাধ্যমের কোনও প্রতিনিধিকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ওই চত্বরে। ১৩ সেপ্টেম্বর এখানেই ওই সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের নিগৃহীত হতে হয়েছিল। গোটা ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল ওই জমিতে থাকা স্টুডিওর মালিক মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত মোহতা এবং তাঁর কয়েক জন ঘনিষ্ঠ সাঙ্গপাঙ্গের।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুধবার সকাল ১০টায় তারাতলার ওই জমিতে মাপজোক করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশ মেনেই বুধবার ঠিক সকাল ১০ টায় পি-৫১ তারাতলা হাইড রোড এক্সটেনটেনশনের গেটে পৌঁছে গিয়েছিলেন বন্দরের প্রতিনিধিরা। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ফিতে দিয়ে তাঁরা মাপজোক করলেন পুরো জমি।

বুধবার বন্দরের প্রতিনিধিরা পৌঁছানোর আগেই পি-৫১ তারাতলা হাইড রোড এক্সটেনটেনশনের গেটে দাঁড়িয়েছিল তারাতলা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন থানার ওসি স্বয়ং। ১৩ সেপ্টেম্বর বন্দর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছিলেন আবেদন জানানোর পরেও থানার কাছ থেকে তাঁরা কোনও সাহায্য মেলেনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নেমেছিলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। বলেছিলন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন, পুলিশ সেই মতোই ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

স্বয়ং কমিশনারের এই মন্তব্য নিয়ে সেই দিনই প্রশ্ন উঠেছিল লালবাজারের অন্দরে। সেই দিন লালবাজারের কর্তব্যরত পুলিশের একাংশের বক্তব্য ছিল, ওই জমিতে থাকা স্টুডিওর মালিক মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ দেখানোর সাহস এই মুহুর্তে লালবাজারের কোনও আধিকারিকের নেই।

বুধবার পুলিশের সেই সব কর্তাদের বক্তব্য ছিল এখনও তো বিষয়টি বিচারধীন। তাহলে এই দিন পুলিশ গেল কি করে? পুলিশের সেই সব কর্তাদের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশে এই দিন বন্দরের প্রতিনিধিরা জমি মাপজোকের কাজে গিয়েছিলেন। তাদের কোনও অসুবিধে হলে বিপাকে পড়তে হত পুলিশকে। তাই আগের দিন নিষ্ক্রিয় থাকলেও এই দিন মুখ বাঁচাতে আগে থাকতেই সক্রিয় ছিল পুলিশ।

এই দিন বন্দরের তরফে যাঁরা মাপজোকের কাজে গিয়েছিলেন, তাঁদের এক প্রতিনিধি জানান এই মামলার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যকের উপস্থিতিতেই মাপজোকের কাজ হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ভিতরে ঢোকা নিয়ে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ ছিল না। তাই আমাদের দিক থেকে কোনও অসুবিধাও ছিল না।

তাহলে কেন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ঢুকতে দেওয়া হল না? প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়ে শুধু মুচকি হেসে গাড়িতে উঠে গেলেন তারাতলা থানার ওসি। এই দিন বাইরে থেকেই দেওয়ালের উপরে উঠে গোটা ঘটনার উপরে নজর রাখনে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

এ দিনই বন্দরের অন্য একটি জমি থেকে দখলদার উচ্ছেদের একটি মামলায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এবং বন্দরের ডেপুটি কমিশনারকে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বন্দর সূত্রের খবর, মাঝেরহাট ব্রিজের পশ্চিমে দুর্গাপুর সাইডিং এলাকায় ৬০০ বর্গ মিটার একটি জমির দখলমুক্ত করতে পুলিশকে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ১ অক্টোবর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও ওই জমি থেকে দখলদারদের সরাতে পারেনি বলে অভিযোগ। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় পুলিশ কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারকে তাঁর আদালতে হাজির থকতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

kolkata port trust police help venkatesh films calcutta port trust port trust land bandar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy