প্রতীকী ছবি।
নামী ব্র্যান্ডের, রংচঙে মোড়কের যে চকোলেট বাচ্চাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তা আসলে কতখানি নিরাপদ? বৃহস্পতিবার রাতে ধাপার মাঠের একটি গুদাম থেকে ১০ টন মেয়াদ-উত্তীর্ণ চকোলেট বাজেয়াপ্ত করার পরে উঠে গেল সেই প্রশ্নই। পুলিশ জানিয়েছে, ওই গুদাম থেকে যে ১০ টন চকোলেট উদ্ধার হয়েছে, তার সবগুলিই মেয়াদ উত্তীর্ণ। এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন পলাতক।
প্রগতি ময়দান থানা সূত্রের খবর, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ধাপার মাঠের ওই বিশাল গুদামে বৃহস্পতিবার রাতে হানা দেয় পুলিশ। তখন সেখানে পেটি ভর্তি চকোলেট নামানো হচ্ছিল। পুলিশ পেটি থেকে প্যাকেট পরীক্ষা করে দেখে, দু’বছর আগেই চকলেটের মেয়াদ-উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ছ’জনকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম মহম্মদ আবদুল হাকিম, শেখ আফরান, শেখ ওয়াসিম, আসলাম শেখ, ইয়াসিন শেখ ও সমীরণ কালসা। ওই গুদামের অন্যতম মালিক, পূর্বাঙ্কন চক্রবর্তী নামে আর এক অভিযু্ক্তকে এখনও ধরা যায়নি। পুলিশ জানতে পেরেছে, চকোলেটগুলি ডানকুনির একটি গুদাম থেকে এসেছিল। সেখানেও তদন্ত শুরু হয়েছে।
শুক্রবার প্রগতি ময়দান থানায় গিয়ে দেখা যায়, পেটিভরা চকোলেট থানার বাইরে রাখা রয়েছে। কিছু চকলেট আবার জারের মধ্যে ভরা। চকোলেটের প্যাকেটে নামী, পরিচিত একটি সংস্থার নাম লেখা রয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, চকোলেটগুলি খুব সম্ভবত প্যাকেট থেকে খুলে জারে ভরে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘মেয়াদ কবে উত্তীর্ণ হচ্ছে, তার তারিখ লেখা থাকে চকোলেটের বড় প্যাকেটে। প্রতিটি ছোট চকোলেট যে রঙিন মোড়কে থাকে, তাতে বা জারে তারিখ লেখা থাকে না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বড় প্যাকেট থেকে চকোলেট বার করে কাচের বয়ামে রাখা হচ্ছিল। সেই বয়াম থেকে চকোলেট দেওয়া হত ক্রেতাকে। ফলে যিনি কিনতেন, তিনি কিছুই বুঝতে পারতেন না। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, অনেক সময়ে বয়ামে নকল কাগজ লাগিয়ে বা নতুন কাগজ প্রিন্ট করে মেয়াদের তারিখ বদলেও দেওয়া হচ্ছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত চকোলেটের প্রায় সবগুলিরই ২০২০ সালে মেয়াদ-উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিছু চকোলেটের মেয়াদ-উত্তীর্ণ হয়েছে ২০২১ সালে। পুলিশ জানিয়েছে, চকোলেট পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে, মেয়াদ-উত্তীর্ণ চকলেট কতটা ক্ষতিকর? শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘মেয়াদ-উত্তীর্ণ চকোলেট খেলে শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এই ধরনের ঘটনাকে কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যায় না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy