আমানতকারীদের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দক্ষিণ কলকাতার একটি স্বর্ণ প্রতিষ্ঠানের তিন কর্তাকে বুধবার রাতে নিউ আলিপুর থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অর্জুন সেন, অনিরুদ্ধ সেন ও অনির্বাণ সেন। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারকের এজলাসে পেশ করা হয়। বিচারক ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের ওই স্বর্ণ প্রতিষ্ঠানটি ‘ধনবৃদ্ধি’ ও ‘ধনতৃষ্ণা’ নামে দু’টি প্রকল্পে ২০১১ সাল থেকে আমানত সংগ্রহ করা শুরু করে। প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত আমানতকারীদের টাকা সুদ সমেত ফেরতও দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, তার পর থেকে ওই দু’টি প্রকল্পে আমানতকারীদের জমা দেওয়া প্রায় ১৭ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে ফেরার হয়ে যান সেখানকার কর্তারা। এর পরেই প্রায় সাড়ে তিনশো আমানতকারী টালিগঞ্জ থানায় ওই কর্তাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেন।
লালবাজারের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘ওই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি টিম (সিট) গঠন করে এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়।’’ তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, শুধু টালিগঞ্জ নয়, আরও চারটি থানাতেও ওই স্বর্ণ প্রতিষ্ঠানের
বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে নিউ আলিপুরে অভিযুক্তদের ধরতে গেলে তাঁরা তিনজন পুলিশের উপর চড়াও হয়ে শাসানি ও ধাক্কাধাক্কি করেন। পুলিশকে গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। কর্তব্যরত পুলিশের উপরে হামলা করার জন্য ধৃতদের বিরুদ্ধে বেহালা থানায় অভিযোগ দায়ের
করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আদালতে আমানতকারীদের তরফের আইনজীবী সেলিম রহমান বলেন, ‘‘ধৃতেরা বিভিন্ন জেলা থেকেও আমানত সংগ্রহ করে প্রতারণা করেছেন। তাঁরা খুবই প্রভাবশালী। সঠিক তদন্তের প্রয়োজন।’’ এ দিন আদালত চত্বরে আমানতকারীদের উপর চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ধৃতদের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। আমানতকারীদের অভিযোগ, অভিযুক্তদের আইনজীবী গোপাল হালদারের নেতৃত্বে কিছু আইনজীবী তাঁদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করেন। আলিপুর থানায় এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন আমানতকারীরা।