E-Paper

আত্মহননে ‘প্ররোচনা’, ধৃত স্বামী, ছেলে ও বৌমা

বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হয় উমাকে। বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ০৭:৪৫
An image of Arrest

—প্রতীকী চিত্র।

হরিদেবপুর থানা এলাকার কৈলাস ঘোষ রোডের বাসিন্দা, প্রৌঢ়া উমা দাসের (৫২) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামী নরেশ দাস, পুত্র অমিত দাস ও পুত্রবধূ মধুমিতা দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির কুয়ো থেকে উদ্ধার করা হয় উমাকে। বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরে এক আত্মীয়া উমার স্বামী, ছেলে ও বৌমার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই আত্মীয়া তাদের জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তিন জন মানসিক অত্যাচার চালিয়ে উমাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমে শুক্রবার ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন আদালত ধৃতদের ৭ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উমার বাড়ির সামনে হাজির হয়েছে পুলিশ। নরেশ, অমিত ও মধুমিতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিবারের অন্য সদস্যেরা। তাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও। উমার কয়েক জন আত্মীয়ের অভিযোগ, সম্পত্তির জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। এই মৃত্যুর পিছনে বড় কোনও অপরাধমূলক ঘটনাও থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। মৃতার খুড়তুতো বোন মিঠু নন্দীর অভিযোগ, ‘‘সম্পত্তিঘটিত কারণে উমার উপরে অত্যাচার চালাতেন নরেশ, অমিত ও মধুমিতা। উমাকে খেতে পর্যন্ত দেওয়া হত না।’’ সম্পত্তির জন্য উমার জা রুবি দাস এবং তাঁর মেয়েকেও অভিযুক্তেরা বাড়ি থেকে বার করে দেন বলে অভিযোগ। রুবি বলেন, ‘‘প্রায় ছ’মাস হল, আমাদের বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে।’’ উমার আত্মীয়েরা জানান, অনেক বার তাঁকে স্বামী, পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উমা তা করেননি। মিঠুর দাবি, ‘‘উমা বলতেন, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে স্বামীর কিছু হয়ে গেলে আমাকে ছেলে ছাড়বে না।’’ প্রতিবেশীদেরও অভিযোগ, উমার উপরে অত্যাচার চালাতেন তাঁর স্বামী, পুত্র ও পুত্রবধূ। ধৃতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।

পরিজন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় তিন বছর আগে অমিতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মধুমিতার। তার পর থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। স্থানীয় বাসিন্দা গোপা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিয়ে হয়ে মধুমিতা এই বাড়িতে আসার পরেই উমার উপরে অত্যাচার শুরু হয়। শাশুড়ি-বৌমার বনিবনা ছিল না। কিন্তু স্বামী হয়ে নরেশ এই কাজ কী করে করল? আমরা চাই, তিন জনেরই কঠোর শাস্তি হোক।’’ এই ঘটনা সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, না কি অন্য কোনও কারণে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই উমার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। মিঠু জানান, রুবি এসে খবর দেন, উমা নিখোঁজ। রাত ৯টা নাগাদ এক প্রতিবেশী ফোনে জানান, কুয়োর ধারে পড়ে আছেন উমা। মিঠুর কথায়, ‘‘কুয়োর ধারে নয়, কুয়োর ভিতরে উপুড় হয়ে উনি পড়ে ছিলেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

arrest Mysterious death police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy